মন্ত্রী বলেন, “ওই হাসপাতালে নিয়োগে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়েছে; তবে সেখানে থাকছেন না উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।”
Published : 07 Jun 2023, 05:43 PM
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের নিয়োগ কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকবেন না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এ হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের মধ্যে বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, “এ মাসেই ওই হাসপাতালের ইনডোর সেবা চালু হচ্ছে। তবে হাসপাতালটির নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এরইমধ্যে অনেক অভিযোগ উঠেছে।
“ওই হাসপাতালে একটি বড় ধরনের নিয়োগ হবে, সেজন্য সেখানে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে ওই কমিটিতে থাকছেন না উপাচার্য অধ্যাপক মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “এক হাজার তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে জাতির পিতার নামের হাসপাতাল এটি, আমাদের আবেগের জায়গা। এই হাসপাতালের গুরুতর অনিয়ম আমরা হতে দিতে পারি না। তবে আপনারা জানেন, বিএসএমএমইউ একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। যে কারণে এ হাসপাতালের নিয়োগ, ক্রয়-বিক্রয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো তারা নিজেরাই নিয়ে থাকে।
“আমাদের সংশ্লিষ্টতা খুব বেশি থাকে না। কিন্তু হাসপাতালটিতে সরকার অর্থায়ন করে থাকে। সে হিসেবে আমরা অবশ্যই অনিয়মের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখব। আমরা চাই না এখানে আসা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হোক। বিষয়টি খুব ভালো করে দেখব।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশের প্রথম এই সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। প্রায় ৭০০ শয্যার এই হাসপাতাল পরিচালনায় চিকিৎসকসহ এক হাজার জনবল প্রয়োজন। এরইমধ্যে প্রায় আড়াইশ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তবে সম্প্রতি এই হাসপাতালে জনবল নিয়োগে ভিসির ‘স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের’ অভিযোগ দুদকে জমা দেন হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
২০১৮ সালে এই স্পেশালাইজড হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। সে সময় বলা হয়েছিল, ১৩ তলা এই হাসপাতালের এক ছাদের নিচেই মিলবে সবধরনের স্বাস্থ্য সেবা, যা হবে বাংলাদেশে প্রথম।
বিএসএমএমইউ এর সেসময়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছিলেন, বাংলাদেশে কম খরচে সর্বাধুনিক চিকিৎসাসেবার মডেল হবে এক হাজার শয্যার এই হাসপাতাল। এটা হবে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালের মত, যেখানে এক ছাদের নিচে মিলবে সব সেবা।
দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে দালালদের যে দৌরাত্ম রয়েছে, বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে সেই প্রসঙ্গেও কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, “ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে দালালের দৌরাত্ম্য আছে। তারা সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীকে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজে দালালমুক্ত রাখতে ড্রেস কোড করে দেওয়া হয়েছে।
“ড্রেস কোড দেওয়া হয় যাতে দালাল কে আর কে কর্মী বোঝা যায়। মন্ত্রণালয় থেকে পরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয় এদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার জন্য। তবে মানুষকেও সচেতন হতে হবে।”
একইভাবে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য নীতিমালা ঠিক করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “যাতে ভাড়া নির্ধারিত থাকে, অ্যাম্বুলেন্সে যা যা থাকা প্রয়োজন তা আছে কিনা, চালকরা দালালি করে রোগীকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে না যায় তাও দেখা হবে।”
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান হোসেনসহ প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন-