পানির নিচে ঢাকার সড়ক: হঠাৎ বিকল যান, ভোগান্তি

প্রায় সব এলাকাতেই পানির কারণে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার কথা জানিয়েছে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2023, 05:11 PM
Updated : 1 July 2023, 05:11 PM

মাঝ আষাঢ়ে ঢাকায় শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টিতে অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়কে পানি জমায় ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন রাজধানীবাসী। 

শনিবার ঢাকা শহরের প্রায় সব এলাকাতেই পানির কারণে যান চলাচল বিঘ্নিত হয় বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সদস্য বিজয় দেবনাথ।

তিনি জানান, দুপুরের পর প্রধান সড়কগুলোতে পানি জমে থাকায় ছোট গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা সড়কেই বিকল হয়ে যাচ্ছিল। সায়েদাবাদ, গোলাপবাগ, রাজারবাগ থেকে শুরু করে মিরপুর রোড, এয়ারপোর্ট রোড, মহাখালী-সবখানেই সড়কে পানি জমে।

শনিবার দুপুরের পর আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে। ঘণ্টা তিনেক ধরে চলা বৃষ্টির শেষ দিকে টিপটিপ করে ঝরেছে অনেকক্ষণ। তবে শুরুর দিকের মাঝারি থেকে ভারি আকারের বৃষ্টিতে অনেক সড়কে পানি জমে গেলে বেকায়দা অবস্থা তৈরি হয়।

পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিকভাবে কাজ না করায় এ পরিমাণ বৃষ্টিতেই রাজধানীর সড়কগুলোতে গাড়ি চলেছে পানি ভেঙে, আশেপাশের মানুষজনকে ময়লা পানিতে ভিজিয়ে। কোনো কোনো সড়কে হাঁটু পর্যন্ত পানিও জমতে দেখা গেছে।

বিজয় দেবনাথ শনিবার রাত ৯টার দিকে জানান, যাত্রাবাড়ী আড়ত, কাজলা রোড থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী থানা ক্রসিং পর্যন্ত সড়কে পানি রয়েছে। যাত্রাবাড়ী থানা ক্রসিং থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত সড়ক পানির নিচে। আবার টিটিপাড়া এলাকার সড়কগুলোও পানির নিচে।

আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ ঢাকায় ৮২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঢাকায় কেবল বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যেই ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

বৃষ্টির পানিতে মিরপুর রোডের ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর সংযোগ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঈদের ছুটিতে রাস্তায় গাড়ির চাপ তেমন না থাকায় যানবাহনগুলোকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। পানি সরে যাওয়ায় রাত ৮টার পর সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এ এলাকার বাসিন্দা দিদারুল ইসলাম বলেন, “মিরপুর রোডের ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর সংযোগ সড়কে বিকালে পানি উঠে ডুবে গিয়েছিল। রাস্তায় চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। কেবল রিকশা চলছিল। তবে রাত ৮টার পর থেকে রাস্তা মোটামুটি শুকনা।”

উবারের গাড়ি চালক মো. জুয়েল বলেন, “রোকেয়া স্মরণী মিরপুর, কাজীপাড়া, শ্যাওড়াপাড়া এলাকায় রীতিমতো নদী হয়ে গেছে। গাড়ির ইঞ্জিন ডোবেনি, তবে দরজার প্রায় মাঝামাঝি পর্যন্ত পানি উঠেছিল। কোনও রকমে চালিয়ে বাড়ি ফিরে গ্যারেজে গাড়ি ঢুকিয়ে রেখেছি।”

ফেইসবুকে ট্রাফিক অ্যালার্ট গ্রুপে জলাবদ্ধতায় চলাচলে বিড়ম্বনায় পড়ার কথা জানিয়েছেন অনেকেই। সেখানে বলা হয়, বিজয় সরণি, এয়ারপোর্ট রোডের নেভি হেডকোয়ার্টারের সামনে, রোকেয়া সরণির বিভিন্ন জায়গায়, আরামবাগে নটরডেম কলেজের সামনের সড়কে পানি জমে চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।

গুলশানে শাহাবুদ্দীন পার্কের সামনে, বারিধারার ভেতরের সড়কগুলোতে, ধানমণ্ডির বিভিন্ন সড়কে, খিলগাঁও-মেরাদিয়া এলাকার সড়কেও পানি জমার কথা জানাচ্ছেন চলাচলকারীরা।

মোটরসাইকেল চালক শহীদুল ইসলাম বলেন, “বিকেলে বিমানবন্দর সড়কের নেভি হেডকোয়ার্টারের সামনে পানি জমার কারণে রাস্তার সামান্য একটু অংশ দিয়ে সব যানবাহনগুলোকে পার হতে হচ্ছিল। যার ফলে সড়কে যানজট লেগে যায়।

“একই অবস্থা ছিল বিমানবন্দর সড়কের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনেও। সেখানে একদিক দিয়ে কার ও সিএনজি অটোরিকশা পার হচ্ছিল। অনেক জায়গাতেই অটোরিকশা বিকল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।”