শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ সাত শিক্ষক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন।
তাদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মচারীও জামিন পেয়েছেন।
সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান তারা।
শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। সেইসঙ্গে মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় বিচারক তা অন্য আদালতে বদলির আদেশ দেন বলে সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার রাকিব চৌধুরী জানান।
উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ ন ম সামসুল আলম, সহকারী প্রধান শিক্ষক (দিবা শাখা) মো. নাসির উদ্দিনসহ আরও জামিন পেয়েছেন সহকারী শিক্ষক ফয়সাল শামীম, মো. আতিক, ফেরদৌসী সুমী, তরিকুল আজম খান, প্রিতীষ বিশ্বাস এবং সিকিউরিটি গার্ড জিয়াউল হক জিয়া ও মাসুদ রানা।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী ছত্রের বাবা ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক গভর্নিং বডির সদস্য শফিকুর রহমান বাদী হয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
ওইদিন আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়।
পিবিআই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। গত ২৩ অক্টোবর আদালত পিবিআইয়ের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আসামিদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করে।
মামলার আরজিতে বাদী বলেছেন, তিনি উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাধ্যমিক শাখায় ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গভর্নিং বডির নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। তার ছেলে ২০২২ সালে এই স্কুলের নবম শ্রেণির মানবিক (দিবা) শাখার ছাত্র ছিল।
গভর্নিং বডির অভিভাবক প্রতিনিধি থাকার সময়ে প্রতিষ্ঠানটির বাংলা মাধ্যম দিবা শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিনের সাময়িক বরখাস্ত এবং কুকীর্তির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন হলে সেই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বাদী।
নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল হোসেনের বরাবর এক প্রতিবেদন দাখিল করেন তিনি। এরপর থেকে আসামিরা বাদী ও তার সন্তানের প্রতি বিরূপ আচরণসহ ‘শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন’ চালিয়ে আসছিলেন। ‘অকারণে ক্লাসে দাঁড় করিয়ে রাখা এবং ছোট করে কথা বলাসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সামনে হেয় এবং বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি’ দেখানো হত তাকে।
এক পর্যায়ে ছেলেটি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে বাদী মামলায় উল্লেখ করেছেন।