“এই ঘটনায় সঠিক ও প্রভাবমুক্ত তদন্ত ও ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের দৃষ্টি থাকা প্রয়োজন,” বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
Published : 06 Mar 2024, 06:38 PM
বহুতল ভবন থেকে ‘পড়ে’ শিশু গৃহকর্মী প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যুর ঘটনার ‘সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের’ দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ২৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
বুধবার বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ। শিক্ষক, আইনজীবী, সংস্কৃতি ও মানবাধিকার কর্মীরা রয়েছেন বিবৃতিদাতাদের মধ্যে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি বহুতল ভবনের নয় তলা থেকে পড়ে প্রীতি উরাং নামের ওই শিশু গৃহকর্মীর মৃত্যু হয়। ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় গৃহ সহায়ক হিসেবে ছিল সে।
ভবনের নিচে তার লাশ মেলার পর স্থানীয়রা ‘প্রীতিকে হত্যা করা হয়েছে’ অভিযোগ করে এলাকায় বিক্ষোভ করেন। প্রীতির বাবা লোকেশ উরাং পরদিন মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার এখন ওই মামলায় কারাগারে আছেন।
এর আগে ২০২৩ সালের ৬ অগাস্ট ওই বাসা থেকে পড়ে যায় ৭ বছর বয়সী শিশু গৃহশ্রমিক ফেরদৌসী। প্রাণে বাঁচলেও তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়।
ওই ঘটনায় মামলা হলেও সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে গেছেন ২ লাখ টাকায় আপসরফার মাধ্যমে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “একই বাসায় স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পর পর দুই শিশুশ্রমিকের হতাহতের ঘটনা উদ্বেগজনক। হত দরিদ্র প্রান্তিক চা শ্রমিকের পরিবারের পক্ষে সমাজের প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করা অতি দুরূহ ব্যাপার। এই ঘটনায় সঠিক ও প্রভাবমুক্ত তদন্ত ও ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের দৃষ্টি থাকা প্রয়োজন। আমরা প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও রাশেদা কে চৌধুরী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্ত, মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি এসএমএ সবুর, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ হাসেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, সংস্কৃতিকর্মী এ কে আজাদ।
এছাড়া গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক জীবনানন্দ জয়ন্ত, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নুর মোহাম্মদ তালুকদার, লেখক-গবেষক প্রিসিলা রাজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফারহা তানজীম তিতিল, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কোষাধ্যক্ষ মেইনথিন প্রমীলা, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা, খেলাঘর সাধারণ সম্পাদক রেজাউল কবির, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল) সভাপতি গৌতম শীল আছেন বিবৃতিদাতাদের মধ্যে।