যশোর থেকে ঢাকায় আসা নারীকে দলবেঁধে ‘ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার ৫

গত ২৫ জানুয়ারি ধর্ষণের এই ঘটনাটি ঘটলেও বিষয়টি প্রকাশ পায় শনিবার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2023, 09:30 AM
Updated : 5 Feb 2023, 09:30 AM

সন্তানদের দেখতে যশোর থেকে ঢাকায় আসা এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় পাঁচ তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  

ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার এ এইচ এম আজিমুল হক জানান, শনিবার রাতে ঢাকার গাবতলী, মোহাম্মদপুর, ডেমরা এবং ভোলায় অভিযান চালিয়ে শফ্কিুল ইসলাম (২৬), বিল্লাল হোসেন (২৫), আল আমীন (২৬), মো. সবুজ (২৬) এবং মো. রাসেলকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধের কথা ‘স্বীকার’ করেছে বলেও এ পুলিশ কর্মকর্তা জানান। 

ওই পাঁচজনের মধ্যে শফিকুলকে ধর্ষণের ঘটনার ‘হোতা’ আখ্যায়িত করে পুলিশ জানিয়েছে, তার রিকশাই ওই নারী ভাড়া করেছিলেন। গ্রেপ্তার অন্যদের মধ্যে পেশায় ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারী ও ট্রাক চালকও আছেন। 

ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত আরও দুইজনকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলে জানান আজিমুল হক। 

গত ২৫ জানুয়ারি ধর্ষণের এই ঘটনাটি ঘটলেও বিষয়টি প্রকাশ পায় শনিবার। রোববার গ্রেপ্তারের খবর জানাতে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন উপ কমিশনার এ এইচ এম আজিমুল হক। 

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ধর্ষণের ঘটনার পর পুলিশের তৎপরতা আঁচ করে ওই পাঁচজন বিভিন্ন জায়গায় ‘আত্মগোপনে’ চলে যায়। 

“আমরা আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ এবং স্থানীয় ব্যাক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করি। তারা দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।” 

গত ২৬ জানুয়ারি থানায় করা মামলায় ২৯ বছর বয়সী ওই নারী বলেন, স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি মোহাম্মদপুরের বছিলায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার স্বামী পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। পারিবারিক বিরোধে মাস চারেক আগে স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। এরপর সন্তানদের বাবার কাছে রেখে গ্রামের বাড়ি যশোরে চলে যান তিনি।

গত ২৫ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে সন্তানদের দেখতে ওই নারী একাই যশোর থেকে বছিলায় আসেন। কিন্তু স্বামী সন্তান নিয়ে যে বাসায় থাকতেন, সে বাসায় গিয়ে জানতে পারেন যে তারা কেউ সেখানে নেই।

এরপর আশেপাশে তাদের খোঁজ করে না পেয়ে যশোরে ফিরে যেতে গাবতলীতে যাওয়ার জন্য একটি রিকশা ভাড়া করেন ওই নারী। রিকশাওয়ালা তাকে গাবতলী না নিয়ে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করার সময় হঠাৎ দুইদিক থেকে দুইজন ওই রিকশায় উঠে সেই নারীকে জিম্মি করে ফেলে।

পরে রিকশাওয়ালাসহ তিনজন মিলে তাকে ভয় দেখিয়ে বছিলার ফিউচার টাউনের ৫ নম্বর সড়কে একটি নির্মাণাধীন বাসার শ্রমিকদের অস্থায়ী টিন শেড ঘরে নিয়ে আটকে রাখে বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী।

সেখানে আরও দুইজন ছিল। তারা সবাই মিলে চড় থাপ্পড় দেওয়ার পাশাপাশি ওই নারীকে হত্যার হুমকি দেয়। তাদের মধ্যে চারজন পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে এবং একজন পাহারা দেয় বলে ওই নারী তার মামলায় উল্লেখ করেছেন।

ওই ঘটনার সময় আরও দুইজনের অবস্থান পুলিশ শনাক্ত করেছে জানিয়ে আজিমুল হক বলেন, “গ্রেপ্তার পাঁচজনও বলেছে তাদের সাথে আরও দুইজন ছিল। তাদের নাম পরিচয়ও পেয়েছি। তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।“ 

উপ কমিশনার আজিমুল হক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ধর্ষণের ঘটনায় এর আগে শাহীন খান (১৯) নামের একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তারও করেছিল। 

“যে নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তার মোবাইল ফোনটি ঘটনার দিন ধর্ষকরা নিয়ে নেয়। পরে পরিত্যক্ত অবস্থায় সেটা শহিন খান বছিলা এলাকায় কুড়িয়ে পায় এবং সেটি ব্যবহারও করে।“ 

ওই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ৪ জানুয়ারি মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান থেকে শাহিন খানকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান উপ কমিশনার আজিমুল হক।

পুরনো খবর:

Also Read: সন্তানদের খোঁজে ঢাকায় এসে দলবদ্ধ ‘ধর্ষণের’ শিকার নারী