অবরোধে ঢাকায় ফিলিং স্টেশনের নিরাপত্তায় পুলিশের ১০ নির্দেশনা

পাম্পের কর্মীদের নিরাপত্তায় লাঠিসোঁটা রাখার নির্দেশনা পাওয়ার কথা জানিয়েছেন পাম্প মালিকদের নেতা নাজমুল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2023, 06:27 PM
Updated : 11 Nov 2023, 06:27 PM

ঢাকার পেট্রোল ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১০ দফা নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

অবরোধের মধ্যে ‘নাশকতার সহজ লক্ষ্যবস্তু’ হিসেবে কেউ যেন পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি স্টেশনে অগ্নিসংযোগ করাকে বেছে নিতে না পারে এবং পেট্রোল পাম্প থেকে তেল সংগ্রহ করে কোনো ধরনের নাশকতা করতে না পারে, সে লক্ষ্যে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান এসব নির্দেশনা দিয়েছেন।

শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) ফারুক হোসেন ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে এসব নির্দেশনা দেওয়ার তথ্য জানিয়েছেন।

শনিবার পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনারে সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। এতে পাম্প মালিকদের পক্ষ থেকে তারা পাম্পগুলোতে পুলিশের তৎপরতা বাড়ানোর অনুরোধ করেন।

“পাম্পের কর্মীদের নিরাপত্তায় যেন যতোগুলো লোক ততোগুলো লাঠি রাখা হয়-এ রকম একটা সিদ্ধান্ত হয়। অন্তত কোনও অঘটনের সময় যেন পাম্প কর্মীরা নিজেরা কিছুটা হলেও বাধা দিতে পারে। ওইজন্য তারা (পুলিশ) আমাদের লাঠিসোঁটা রাখতে বলছে। এছাড়া কিছু পাম্পে আনসার আছে।”

তবে এখনও এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়নি জানিয়ে নাজমুল বলেন, ঢাকা শহরের ১৬৬টি পেট্রোল পাম্পকে চিঠি দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াতে বলা হয়েছে। শনিবার মাত্র চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। ওই ব্যবস্থা কার্যকর করতে হয়তো দু-একদিন সময় লাগতে পারে।

“আমরা বলেছি, পুলিশের টহল গাড়ি যেন কোনও প্রয়োজন না থাকলেও কিছুক্ষণ পরপর পাম্পগুলোতে এসে ঘুরে যায়। পুলিশ কমিশনার এই প্রস্তাব পছন্দ করেছেন।”

নিদের্শনাগুলোর বিষয়ে ডিএমপির অনলাইন প্রকাশনা ডিএমপি নিউজে বলা হয়েছে-

>> পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি স্টেশন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ সব ধরনের নাশকতা রোধকল্পে পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে।

>> সহকারী পুলিশ কমিশনার এবং থানার ওসিরা নিজ নিজ এলাকার পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি স্টেশনগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করে কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।

>> প্রত্যেক অপরাধ বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) ও থানার ওসিরা নিজ নিজ এলাকার পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি স্টেশনগুলোর মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কিছু ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-

-         পাম্প মালিকরা নিজ নিজ পাম্পে নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।

-         প্রত্যেক পাম্পে রাতের ছবি ধারণে সক্ষম সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। এসব ক্যামেরার ডিভিআর বক্স নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে।

-         সংশ্লিষ্ট থানার ডিউটি অফিসার, ওসি, ফায়ার সার্ভিসসহ জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।

-         পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপন সরঞ্জাম রাখা এবং মহড়ার মাধ্যমে ওইসব সরঞ্জামের কার্যকারিতা যাচাই করতে হবে।

-         পাম্পের রিজার্ভারে (লরি থেকে) তেল লোডের সময় নিজস্ব জনবল দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এবং ওই সময়ে সব ধরনের যানবাহন পেট্রোল পাম্পে প্রবেশ করতে না দেওয়া।

-         খোলা জ্বালানি তেল বিক্রি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখতে হবে। তবে বাসা বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জেনারেটরের তেল কিনতে হলে সংশ্লিষ্ট থানার ওসির দেওয়া নিরাপত্তা ছাড়পত্র পাম্পে দেখাতে হবে। এবং খোলা তেল বিক্রির বিষয়টি পাম্পে রাখা রেজিস্টারে লিখতে হবে।

-         পেট্রোলিয়াম বিধিমালা ২০১৮ এর লাইসেন্সের শর্তাবলী যথাযথভাবে প্রতিপালন করার পাশাপাশি যেকোনো প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানোর জন্য বলা হয়।