“সাংবাদিকরা আমাকে বিভিন্ন সময় শক্ত করে ধরেছেন। বারবার সমালোচনা হয়েছে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানকে নিয়ে,” বলেন মন্ত্রী।
Published : 21 Jan 2024, 03:41 PM
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে বারবার তাকসিম এ খানের পুনর্নিয়োগ নিয়ে স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘যোগ্যতা আর কর্মকদক্ষতার কারণেই’ তাকে ওই দায়িত্বে রাখা হয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ওয়াসা ভবনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কমর্চারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই ব্যাখ্যা দেন।
মন্ত্রী বলেন, “সাংবাদিকরা আমাকে বিভিন্ন সময় শক্ত করে ধরেছেন। বারবার সমালোচনা হয়েছে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানকে নিয়ে। তারা বলেছেন, কেন বারবার ওয়াসার এমডি হিসেবে বর্তমান এমডি থাকেন, কেন এতবার তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে?
“সেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমি বলেছি- কোনো মানুষই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। আমাকে নিয়ে বিতর্ক করা যাবে না এমন মানুষ আমিও নই। কিন্তু বিষয় হল, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা আমি কতটা ভালোভাবে পালন করতে পেরেছি, কতটা অবদান রাখতে পেরেছি, এটা হল গুরুত্বপূর্ণ।”
তাজুল বলেন, “এমন অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে একজন কর্মকর্তা ২০/৩০/৪০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। ওয়াসার এমডি বারবার কেন দায়িত্ব পেয়েছেন? কারণ তিনি যোগ্যতা ও সামর্থ্যের পরিচয় দিয়েছেন। নিজের যোগ্যতার কারণে, কর্মদক্ষতার কারণে তিনি বারবার দায়িত্ব পেয়েছেন।”
ঢাকা ওয়াসা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন। প্রতিষ্ঠানটি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে রোববারের মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন তাকসিম এ খান। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম, ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুজিত কুমার বালাও সভায় ছিলেন।
২০০৯ সালে তাকসিমকে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়োগ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তার ষষ্ঠ দফায় নিয়োগের মেয়াদ গত বছরের ১৪ অক্টোবর শেষ হয়। সপ্তম দফায় আবার তাকে একই পদে রাখা হয়।
তাকসিম খানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গত বছর বিদায় নিতে হয় সংস্থাটির বোর্ডের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফাকে। তার আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে গোলাম মোস্তফা অভিযোগ করেছিলেন, “তাকসিম ওয়াসা বোর্ডের সঙ্গে অসহযোগিতা, আইন ভঙ্গ করে ব্যক্তিগত সম্পদের মত স্বৈরাচারী কায়দায় ওয়াসা প্রশাসন পরিচালনা করে ওয়াসাকে অনিয়ম, অপচয় আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন।”
এমডি হিসেবে তাকসিমের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ২০২২ সালে হাই কোর্টে একটি রিট করে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব)। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৭ অগাস্ট হাই কোর্ট আদেশ দেয়- তাকসিম গত ১৩ বছর ধরে বেতন-ভাতা বাবদ কত টাকা নিয়েছেন, সেই হিসাব ৬০ দিনের মধ্যে দাখিল করতে হবে।
সেইসঙ্গে তাকসিম এ খানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাকে অপসারণে বিবাদীদের ‘নিষ্ক্রীয়তা’ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাই কোর্ট।
যত দিন পর্যন্ত তাকে অপসারণ করা না হবে, তত দিন ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী তার বেতন নির্ধারণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে।
ওয়াসার এই কর্মকর্তার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রোববার তাজুল ইসলাম বলেন, “এক সময় ঢাকায় পানির জন্য কলসি মিছিল হয়েছে, সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হয়েছে। পানির মানও ছিল খুব খারাপ। সেই অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
“সে সময় পানি খাওয়া তো দূরের কথা, দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারও করা যেত না। এ রকম অনেক চ্যালেঞ্জ, অনেক প্রতিকূলতা ছিল। প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সালেই অনেকগুলো পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। এসব কারণেই আজ এই অবস্থায় এসেছে।”