বিমান বলছে, যাত্রীদের ভ্রমণ নথিতে গরমিল পেয়েছে কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি (সিবিএসএ)। যে কারণে তাদের ফ্লাইট থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়।
Published : 14 Nov 2023, 04:44 PM
সিলেট থেকে কানাডার টরন্টো যাওয়ার পথে ৪৫ জন যাত্রীকে উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে নেওয়ার বিষয় নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে নিজেদের ব্যাখ্যা দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
ওই ৪৫ যাত্রীকে গত ৬ নভেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়। তারা একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কানাডায় যাচ্ছিলেন বলে তাদের ট্রাভেল ডকুমেন্টে উল্লেখ ছিল।
তবে বিমান বলছে, যাত্রীদের ভ্রমণ নথিতে গরমিল পেয়েছে কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি (সিবিএসএ)। যে কারণে তাদের ফ্লাইট থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়। ভুয়া তথ্য সম্বলিত ভ্রমণ নথিসহ যাত্রী বহন করা হলে এয়ারলাইন্স কোম্পানিকে যাত্রীপ্রতি ২০ হাজার কানাডিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা গুণতে হতে পারে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকারের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৬ নভেম্বর রাত ৮টা ২৫ মিনিটে বিমানের ফ্লাইটে সিলেট থেকে ৭৪ জন যাত্রী ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এসব যাত্রীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী ছিলেন বিমানের টরন্টো ফ্লাইটের। ৭ নভেম্বর তাদের ভ্রমণ করার কথা ছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বিমানের সিলেট স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা যাত্রীদের ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পর্যালোচনা করে দেখতে পান ৪৫ জন যাত্রী একই ব্যক্তির আমন্ত্রণপত্রের মাধ্যমে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কানাডা যাচ্ছেন। তাৎক্ষণিকভাবে ডকুমেন্টগুলো পর্যালোচনা করে সন্দেহ হওয়ায় সিলেট স্টেশন থেকে যাত্রীদের ডকুমেন্ট ঢাকার পাসপোর্ট কন্ট্রোল ইউনিটে (পিসিইউ) পাঠানো হয়।
“পিসিইউ থেকে ডকুমেন্টগুলো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য দিল্লির কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির (সিবিএসএ) কাছে পাঠালে প্রথমে তারা জানায় সিবিএসএ- এর সিস্টেমে যাত্রীর তালিকায় যাত্রীর তথ্য সঠিক রয়েছে। ফলে সিলেট থেকে যাত্রীদেরকে বোর্ডিং কার্ড ইস্যু করা হয় এবং যাত্রীরা ঢাকায় পৌঁছান।”
পরে কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি থেকে যাত্রীদের আমন্ত্রণপত্রের তথ্যের সঙ্গে আবাসন তথ্যের গরমিল রয়েছে জানায় উল্লেখ করে বিমানের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আমন্ত্রণপত্রে হোটেলে থাকার কথা থাকলেও যাত্রীদের কাছে রেন্টেড হাউজের ডকুমেন্ট পাওয়া যায়। কানাডিয়ান আইন অনুযায়ী একটি রেন্টেড হাউজে ৪৫ জন যাত্রী থাকার কোনো নিয়ম নেই এবং তা ‘ফায়ার কোড ভায়োলেশন’ বলে বার্তায় উল্লেখ করা হয়।”
যাত্রীদের ডকুমেন্ট ও কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির বার্তা পর্যালোচনা করে বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলোচনা করে ৪৫ জন যাত্রীকে টরন্টো ফ্লাইট থেকে অফলোড করার সিদ্ধান্ত নেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই যাত্রীদের তথ্য সিবিএসএ-এর পক্ষ থেকে কানাডার ভিসা ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের পর সংশ্লিষ্ট যাত্রীদেরকে ইমেইলে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে।
বিমানের ভাষ্য, যাত্রীর কাছে যথাযথ ডকুমেন্ট না থাকলে বা এ ধরনের ভায়োলেশনের জন্য কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সকে যাত্রীপ্রতি ৩ হাজার ২০০ থেকে ২০ হাজার কানাডিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে।
বিমানের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অফলোড করার পর ওই যাত্রীদেরকে হোটেলে থাকার কথা বলা হলেও তারা সেখানে যাননি। টরন্টো ফ্লাইটে না পাঠানোর বিষয়টি তাদের বুঝিয়ে বলা হয়। পরবর্তীতে ইমিগ্রেশন থেকে তাদের বহির্গমন সিল বাতিল করে ব্যাগেজ বুঝিয়ে দেয়া হয় এবং যাত্রীরা নিজেদের মত বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।