কমপক্ষে ৩০টি আসনে সংসদ সদস্য থাকলে বিরোধীদলের নেতা হবেন– এমন আইন চান নোটিসদাতা আইনজীবী।
Published : 30 Jan 2024, 07:38 PM
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এবং দলটির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে উপনেতার স্বীকৃতি দিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল চেয়ে উকিল নোটিস পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ মঙ্গলবার রেজিস্টার্ড ডাকযোগে জাতীয় সংসদের স্পিকার ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এই নোটিস পাঠান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, নোটিসে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচন করে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। তা না হলে আইনি পদক্ষেপ চেয়ে রিট আবেদন করবেন তিনি।
জাতীয় পার্টির ১১ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে থেকে ‘কোন আইন ও কর্তৃত্ব বলে’ মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বেতন ভাতা দিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা ও উপনেতা নিয়োগ করা হল, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে নোটিসে।
এ নিয়োগের ফলে সরকারের গাড়ি, বাড়ি ও অর্থের অপচয় হবে দাবি করে নোটিসদাতা বলেন, “জাতীয় পার্টি ১০ শতাংশ আসনও লাভ করেনি। ৩০০ আসনের মধ্যে কমপক্ষে ৩০টি আসনে সংসদ সদস্য থাকলে বিরোধীদলের নেতা হবেন– এমন আইন থাকা অতি জরুরি, নচেৎ পুনরায় নির্বাচন দিতে হবে।
“কতজন সংসদ সদস্য থাকলে বিরোধীদলীয় নেতা হতে পারবেন সে বিষয়ে সংসদে আইন করতে হবে। আইন না করা পর্যন্ত সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদ ভারতের মত খালি থাকবে।”
জিএম কাদের বিরোধী দলীয় নেতা, আনিসুল ইসলাম উপনেতা
কমপক্ষে ৬০ জন সংসদ সদস্য উপস্থিত না হলে সংসদে বৈঠক কোরাম হবে না – সংবিধানের ৭৫ (২) অনুচ্ছেদের এই নিয়ম তুলে ধরে নোটিসে বলা হয়, বিরোধী দলের নেতা নির্বাচনের জন্যে কতজন সদস্য থাকলে অনুরূপ কোরাম হবে তা সংবিধানে নেই বা কতজন সংসদ সদস্য থাকলে বিরোধী দলের নেতা ও উপনেতা মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী পদ মর্যাদা বেতন ভাতাসহ নিয়োগ হবে, তাও সংবিধানে নেই। এ ধরনের নেতা ও উপনেতা স্পিকার কোন আইনে বা কোন ক্ষমতাবলে নিয়োগ দিতে পারেন, সেটাও আইন ও সংবিধানে নেই।
নোটিসে অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, ভারতের লোক সভায় ১০ শতাংশ সদস্যসহ দ্বিতীয় স্থানে না থাকলে বিরোধীদলের নেতার পদ খালি থাকে এমন আইন আছে; কিন্তু আমাদের দেশে নিয়োগেরও আইন নাই বা কত সংখ্যক এমপি থাকলে বিরোধীদলের নেতা হতে পারবে তাও উল্লেখ নেই।
গত ২৮ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা এবং এবং আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে উপনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় সংসদ সচিবালয়।
জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী এ স্বীকৃতি দেন।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৩ আসন পেয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে। নির্বাচনে ৬২টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন; জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১ আসন। তিনটি আসন পেয়েছে অন্য তিনটি দল। প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনে নির্বাচন হয়নি।