“দস্যুদের আগের চেয়ে নমনীয় মনে হচ্ছে। মালিকপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি সমাধান করার চেষ্টা করবে।”
Published : 20 Mar 2024, 10:14 PM
বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর মালিকপক্ষের সঙ্গে সোমালি জলদস্যুদের যোগাযোগ স্থাপনের পর নাবিকদের দ্রুত মুক্তির আশায় বুক বাঁধছেন জিম্মি হওয়া নাবিকদের স্বজনরা।
আবদুল্লাহর চিফ অফিসার আতিক উল্লাহ খানের শ্বশুর মোহাম্মদ ফরহাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘এটি একটি ভালো খবর, জিম্মি নাবিকদের পরিবারের জন্য স্বস্তিদায়ক। দস্যুরা যোগাযোগ করেছে মানে নাবিকদের মুক্ত করার একটি প্রক্রিয়া শুরু হল।’’
তৃতীয় একটি পক্ষের মাধ্যমে সোমালি জলদস্যুরা আবদুল্লাহর মালিক প্রতিষ্ঠান কবির গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে জানানো হয় বুধবার দুপুরে।
তৃতীয় পক্ষটি কে তা খোলাসা করা হয়নি আর প্রথমবারের মত কথা হলেও কোনো প্রকার মুক্তিপণ চাওয়া হয়নি বলেও কবির গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তবে প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলছেন, “দস্যুদের যোগাযোগ করা মানে নাবিকদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হওয়া। এখন তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে আলাপ আলোচনা এবং মুক্তিপণের বিষয়ে দরকষাকষি চলবে।”
জানতে চাইলে গ্রুপের মিডিয়া ফোকাল পারসন মিজানুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দস্যুদের আগের চেয়ে নমনীয় মনে হচ্ছে। মালিকপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি সমাধান করার চেষ্টা করবে।”
মিজানুল বলেন, “আমাদের লক্ষ্য যে কোনোভাবে নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। জাহাজ ও নাবিকেরা জিম্মি হওয়ার পরের আটদিনে জলদস্যুরা যোগাযোগ না করলেও আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ এগিয়ে রেখেছি।”
মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাত যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরের সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। তারা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২৩ নাবিকের সবাইকে জিম্মি করে।
গত কয়েক দিনে এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের সঙ্গেই কেবল যোগাযোগ হচ্ছিল বলে মালিকপক্ষ জানাচ্ছিল। জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় একটা অনিশ্চয়তা আর আতঙ্কও কাজ করছিল। এরই মধ্যে জাহাজটি নিয়ে কয়েকবার অবস্থান পাল্টেছে জলদস্যুরা।
বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজটি এবং জিম্মি নাবিকদের জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত করতে সোমালিয়ার পান্টল্যান্ড পুলিশ এবং আন্তর্জাতিক নৌবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে রয়টার্সে খবর এসেছে।
পূর্ব আফ্রিকা উপকূলে জলদস্যুতা নির্মূলে কাজ করে যাওয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেভাল ফোর্স তাদের ‘অপারেশন আটলান্টার’ অংশ হিসেবে এমভি আবদুল্লাহর ওপর নজর রাখছে।
ইউরোপীয় এই বাহিনী আবদুল্লাহর জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তাব দিলেও বাংলাদেশ সরকার তাতে সায় দেয়নি বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব খুরশেদ আলম আগে জানিয়েছিলেন।
ভারতীয় নৌবাহিনীও এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সশস্ত্র জলদস্যুরা নাবিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখায় সেটি সম্ভব হয়নি।