২ হাজার ৮৯ টি কেন্দ্রের তথ্য পেয়ে সিইসি বলেছেন, চতুর্থ ধাপে ভোটার উপস্থিতি ৩৪ শতাংশের মত হতে পারে।।
Published : 05 Jun 2024, 06:36 PM
চার ধাপে প্রায় সাড়ে চারশ উপজেলায় তুলনামূলক কম ভোটার উপস্থিতি থাকলেও বড় ধরনের সহিংসতা না হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
বুধবার চতুর্থ ধাপে ৬০ উপজেলার ভোট শেষে বুধবার বিকালে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের কাছে এই প্রতিক্রিয়া দেন তিনি।
সিইসি বলেন, “আমরা খুবই সন্তুষ্ট নির্বাচনটা শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কোনো রকম কোনো সহিংসতা হয়নি, মেজর কোনো ইনসিডেন্ট হয়নি। সেটা এক দিক থেকে স্যাটিসফাইড।“
এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও কাউকে প্রার্থী ঘোষণা করেনি, কাউকে সমর্থনও দেয়নি।
প্রার্থীদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতা, তারা ভোট করছেন স্বতন্ত্র হিসেবে যার যার মত।
২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক যুক্ত হওয়ার পর এবারই ‘অভিনব’ এমন নির্বাচন হল যেখানে প্রার্থীদের ৯৯ শতাংশেরও বেশি স্বতন্ত্র প্রার্থী।
যখন দলীয় প্রতীক ছাড়া স্থানীয় নির্বাচন হত, তখন দলগুলো পরোক্ষভাবে প্রার্থী দিত, কিংবা কোনো না কোনো নেতার প্রতি সমর্থন জানাত। এবারও তাও ছিল না।
বিএনপি বর্জন করলেও দলটির তৃণমূলের দুইশরও বেশি নেতা ভোটে ছিলেন। তারা ভোট বর্জন করায় তুলাধুনা করেছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের। অন্যদিকে কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, তাদের সঙ্গে আঁতাত হয়েছে ‘অশুভ শক্তির’।
আরও পড়ুন:
উপজেলা নির্বাচন: চতুর্থ ধাপে শান্তিপূর্ণ ভোট শেষে গণনা
চার ঘণ্টায় ভোটের হার ১৭.৩১%: ইসি সচিব
বিএনপি নেতাদের আশা ছিল, তাদের কর্মী সমর্থকরা পাশে দাঁড়ালে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর ফাঁক গলে জয় পাবেন তারা। তবে তারাও কর্মী সমর্থকদের টানতে পেরেছেন কমই। তাই জিততে পারেননি সেভাবে।
তবে গত কয়েক বছর ধরে ভোটে অনিয়মের যে অভিযোগগুলো আসত, সেগুলো এবার অনুপস্থিত। প্রচার চলাকালে বেশ কিছু নির্বাচনি এলাকায় হুমকি ধমকি এলেও কেন্দ্র দখল, ভোটারদের বাধা দেওয়া বা কোনো মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগগুলো আসেনি।
বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনে গত ৭ মে থেকে চার ধাপে এবার যে নির্বাচন হয়েছে, তাতে ভোটারের উপস্থিতি ছিল তিরিশের ঘরে। তিন ধাপে ভোটের উপস্থিতি ছিল ৩৬ থেকে ৩৮ শতাংশ। বুধবারও ভোটের হার ৩৪ শতাংশের মতো হতে পারে বলে
তৃতীয় ধাপে ভোটার উপস্থিতি ৩৪ শতাংশের মত হতে পারে বলে ‘প্রাথমিকভাবে’ জানান সিইসি।
কম উপস্থিতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “এ রাজনৈতিক বিচার বিশ্লেষণ আমরা এখন করতে পারবো না। এগুলোর অনেক কিছু আছে, যারা বিচার বিশ্লেষণ করে।”
চতুর্থ ধাপে ৬০ উপজেলায় ভোট হয়েছে।
বিকাল ৫ টার মধ্যে চতুর্থ ধাপের ৫ সহস্রাধিক কেন্দ্রের মধ্যে ২ হাজার ৮৯ টি কেন্দ্রের ভোটের হারের তথ্য পেয়েছেন বলে জানান সিইসি।
ভোটে বড় ধরনের সহিংসতা না হলেও ছোটোখাটো ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার একটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
সিইসি জানান, চতুর্থ ধাপে ভোটের দিন বিধি লঙ্ঘন, শৃঙ্খলা বিঘ্ন করায় মোট ২৮ ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন। নয়জনকে বিভিন্ন দণ্ড দেওয়া হয়েছে। তারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করেছেন। ২১ জনকে জরিমানা করা হয়েছে।
“ভৈরব উপজেলায় একটা ঘটনা ঘটেছে। সেখানে একটা ব্যালট বাক্স ছিনতাই করা হয়েছে, সেটা খুলেও ফেলেছিল দুর্বৃত্তরা। ফলে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।”
তবে এমন ঘটনাকে খুব এটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না সিইসি। তিনি বলেন, “সহিংসতার কথা যদি বলি খু্ব মাইনর। আহত হয়েছেন ১১ জন ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার কারণে। বরিশালে পাঁচ আহত হয়েছে, ওখানে একটু কোপাকুপি হয়েছে। খু্ব গুরুতর নয়। তবে মাইনরের চেয়ে একটু বেশি।”
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় একজন প্রিজাইডিং অফিসার নিজেই ব্যালট পেপারে সিল মারছিলেন জানিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, “তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টোটাল জাল ভোটের ইনসিডেন্ট ঘটেছে পাঁচটি। ইভিএমে যেখানে ভোট হয়েছে, সেখানে কোনো ইনসিডেন্ট হয়নি।
চার ধাপের ভোট শেষে ঘূর্ণিঝড় রেমালে স্থগিত ২০ টি উপজেলায় আগামী ৯ জুন ভোট রয়েছে।
আরও পড়ুন: