“অঙ্গীকার পূরণ না করার কারণে শ্রমিক যদি ফুঁসে ওঠে, স্কপ শ্রমিকদের পাশে থাকবে।”
Published : 16 Mar 2025, 01:44 PM
রোজার ২০ দিনের মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ না করলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ।
রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক কর্মসূচি থেকে এই হুঁশিয়ারি দেন স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী আশিকুল আলম।
তিনি বলেন, “আমাদের কথা একটাই, অঙ্গীকার অবশ্যই পূরণ করতে হবে। অঙ্গীকার পূরণ না করার কারণে শ্রমিক যদি ফুঁসে ওঠে, স্কপ শ্রমিকদের পাশে থাকবে। প্রয়োজনে লাগাতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণি তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে।”
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, “বাংলাদেশ চলে শ্রমজীবী মানুষের শ্রমে, বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরায় তারা, কিন্তু তাদের জীবনের চাকা ঘোরে না। এই দাবি নিয়ে আমরা বার বার রাস্তায় এসেছি এবং আমরা দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরাব, সাথে সাথে আমাদের জীবনের চাকাও ঘোরাতে হবে।
“রমজানের আগেই আমরা বৈঠক করেছি, ঈদ নিয়ম অনুযায়ী আসবে, আপনারা (শিল্পের মালিকরা) নিয়ম অনুযায়ী বেতন দেবেন, ঈদ সময়মত হবে আপনারা সময় মত বোনাস দিয়ে দেবেন। এই কথাটা আমাদের সঙ্গে উনারা চুক্তি করেছে। আমরা দেখতে চাই এই চুক্তির যেন বরখেলাপ না হয়। এই চুক্তির যদি বরখেলাপ করেন, আর শ্রমিকরা যদি রাস্তায় নামে, শ্রমিকদের পেটাবার কোনো নৈতিক অধিকার আপনাদের থাকবে না।”
তিনি বলেন, “আমরা বৈষম্য দূর করতে চাই এবং রাষ্ট্রকে বলতে চাই, রাষ্ট্র তুমি শ্রমিকের শ্রম এবং ঘাম দিয়ে, তার ট্যাক্সের টাকা দিয়ে তোমার মন্ত্রী, তোমার উপদেষ্টা, তোমার সচিব, তোমার পুলিশের কর্মকর্তা, তোমার সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা তাদের বেতন দিতে পার। তাহলে রাষ্ট্র তোমার দায়িত্ব শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন-বোনাসে ঈদের আগে পরিশোধ করা।
“বেতন পরিশোধ যদি না করা হয় এর দায়িত্ব রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে। আমরা বিশৃঙ্খলা করতে চাই না, আমরা কোনো রাস্তায় বিক্ষোভ করতে চাই না, আমরা পুলিশের গুলি খেতে চাই না, আমরা সেনাবাহিনীর ধমক খেতে চাই না। আমরা শুধু চাই, কাজ করেছি মাসের শেষে বেতনটা দেবেন। ঈদ এসেছে ঈদের আগে আমাদের বোনাসটা দেবেন, আমাদের যদি কোনো পাওনা বকেয়াটা দেবেন।”
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে স্কপের উদ্যোগে এই সমাবেশ থেকে ঈদের আগে কোনোভাবেই শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত না করা এবং ২০ রোজার মধ্যে বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ সংক্রান্ত সরকার, মালিক ও শ্রমিক এর ত্রিপক্ষীয় সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং শ্রমিকদের মতামত ও স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে অতিসত্ত্বর শ্রম আইন সংশোধনের দাবি জানানো হয়।
লাল পতাকা এবং ঈদের আগে বেতন-বোনাস দেওয়ার দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে নারী পোশাক শ্রমিকরা সমাবেশে অংশ নেন। পরে স্কপের নেতৃবৃন্দ পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন।
সমাবেশে অংশ নেওয়া শ্রমিক নেতা আবদুল কাদের হাওলাদার বলেন, “এখন লেবুর হালি ৮০ টাকা। এই দাম আমি ৮০ বছর বয়সে আগে দেখি নাই।… অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম কি আর বলব।
“আমরা বেশি কিছু চাই না। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ, শুধু শ্রমিক না, সকল মেহনতি মানুষ, তারা যেন সুন্দরভাবে ঈদ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।আমি একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা। আমরা গরীব মানুষের, শ্রমিক মানুশে, আমাদের শ্রমের ন্যায্য পাওনা চাই, শ্রমের মূল্য চাই।”
অন্যদের মধ্যে শ্রমিক নেতা সাইফুজ্জামান বাদশা ও শামীম আরা সমাবেশে বক্তব্য দেন।