রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
Published : 27 May 2024, 06:53 PM
আটকের পর মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগে দায়েরা করা মামলায় রাজধানীর শাহজাহানপুর থানার সাবেক এএসআই মো. মনিরুল ইসলাম ও কনস্টেবল এস এম জুলফিকার আলীসহ তিনজনকে সাড়ে ৪ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামির নাম মো. নূর উদ্দীন আহমেদ।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মো. নিরব হাসান সজিব নামের এক আসামিকে খালাস দিয়েছে আদালত।
সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
তিনজনকে দণ্ডবিধির ৩৪২ ধারায় ৬ মাস কারাদণ্ড ও ৩৮৮ ধারায় ৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৪ মাস কারাভোগ করতে হবে।
আসামিদের সবগুলো সাজা একত্রে ভোগ করতে হবে। অর্থাৎ প্রত্যেক আসামিকে ৪ বছর করে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ আদালতের পেশকার আতিকুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
রায়ের বিবরণ থেকে জানা যায়, বাদী খন্দকার নুরুজ্জামান রাইড শেয়ারিং কোম্পানি উবারের সঙ্গে কাজ করেন। ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই রাত আনুমানিক ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি মোবাইল ফোনে উবারের মাধ্যমে মালিবাগের গুলবাগ রোড থেকে একটি কল গ্রহণ করেন।
রাস্তা কাটা থাকায় কল দেওয়া ব্যক্তি জানান, তার ছোট ভাই নুরুজ্জামানকে মালিবাগ মোড়ের কাছে স্বপ্ন নামের এক দোকানের সামনে থেকে পথ দেখিয়ে পিকআপ পয়েন্টে নিয়ে আসবেন। সে মোতাবেক নুরুজ্জামান দোকানের সামনে গেলে নিরব হাসান সজিব পথ দেখানোর কথা বলে মালিবাগ কালসির গলির শেষ প্রান্তে নিয়ে যান।
সেখানে গিয়ে পুলিশের পোশাকে আসামি মনিরুল ও জুলফিকারকে দেখতে পান নুরুজ্জামান। আসামিরা নুরুজ্জামানের পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন ও তার গাড়ি তল্লাশি করে চালকের আসনের পেছনে হাত বুলিয়ে একটি লম্বা ট্যাপে মোড়ানো ৪-৫টি ট্যাবলেট সদৃশ কিছু দেখান।
ওই সময় আরেক আসামি সাংবাদিক পরিচয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ও জুলফিকার বাদী নুরুজ্জামানকে ‘ট্যাবলেট’ ব্যবসায়ী বলে জানান এবং হাতকড়া পরিয়ে দেন।
এরপর এক আসামি নুরুজ্জামানের গাড়িতে ওঠে চালিয়ে বড় ফটক লাগানো খালি এক জায়গায় নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর এক আসামি গেট বন্ধ করে দেন। পরে একটি একচালা টিনের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় নুরুজ্জামানকে। এরপর বাদীকে আসামিরা সমঝোতা করতে চাপ প্রয়োগ করেন। বাবু নামের আরেক আসামির সঙ্গে কথা বলে ৬০ হাজার টাকা চান আসামিরা। বাদী টাকা দিতে না চাইলে ২০০ ইয়াবা দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। বাদী অসুস্থ বলে শেষ পর্যন্ত ২৫ হাজার টাকায় রফা করেন।
মুক্ত হওয়ার পর খন্দকার নুরুজ্জামান শাহজাহানপুর থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহানপুর থানার এসআই আবু সিদ্দিক ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পরের বছর ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১২ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে।