নারী ও শিশুদেরকে বর্ণিল পোশাকে এই উৎসবে অংশ নিতে দেখা গেছে।
Published : 12 Apr 2024, 04:01 PM
ঢাকায় বসাবাস করা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষরা রমনা লেকের জলে ফুল ভাসিয়ে উদযাপন করলেন ‘বৈসাবি’ উৎসব।
শুক্রবার পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এই অনুষ্ঠান হয়।
বেইলি রোডের পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স থেকে রমনা লেক পর্যন্ত তিন পার্বত্য জেলা ও বাঙালিদের সমন্বয়ে বর্ণিল শোভাযাত্রা হয়। পরে রমনা লেকে ভাসানো হয় বৈসাবির ফুল।
শিশুরা কলাপাতার ওপর ফুল রেখে লেকের পানিতে ভাসিয়ে দেয়। নারী ও শিশুদেরকে বর্ণিল পোশাকে এই উৎসবে অংশ নিতে দেখা গেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মশিউর রহমান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে বলেন, “বৈসাবি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় হবে, পারষ্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ ও আস্থা সুদৃঢ় হবে। যার মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলের শান্তি আরও সুদৃঢ় হবে।
“বৈসাবি মূলত বর্ষবরণ ও পাহাড়িদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সম্মিলন। বৈসাবির ঐতিহ্য সমতলের মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য প্রতিবছর ঢাকায় এই আয়োজন করা হয়ে থাকে।”
অনুষ্ঠানে ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি বিধান ত্রিপুরাসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে ডিআইজি বিধান ত্রিপুরা বলেন, “ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু- এই তিন সম্প্রদায়ের সমন্বয়ে বৈসাবি। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমারা ধর্মীয়ভাবে সংখ্যাধিক্য। এই তিন ধর্মাবলম্বীদের পাহাড়ের অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে ধর্মীয় ও সামাজিক জীবন-যাপনের মিল রয়েছে বিধায় পাহাড়ের সবাই মিলে এই অনুষ্ঠানটি উদযাপন করে থাকেন।
“যারা ঢাকায় অবস্থান করেন তারা রমনার লেকে ফুল ভাসিয়া অনুষ্ঠানটি উদযাপন করে থাকেন। অধিকাংশরা নাড়ির টানে নিজ এলাকায় চলে যান।”
বৈসাবির দিনটি চাকমাদের ‘ফুল বিজু’। ত্রিপুরারা দিনটিকে বলেন ‘হারি বৈসুক’। এই দিনে ত্রিপুরা জাতিসত্তার শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারীরা নদীতে ফুল ও প্রদীপ ভাসিয়ে মা গঙ্গার আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। তাদের বিশ্বাস, এতে অমঙ্গল দূর হবে, পুরোনো বছরের জরাব্যাধি নাশ হবে। চাকমাদের প্রার্থনার মধ্যেও এই মঙ্গল কামনাই থাকে।
একজন নারী বলেন, “পাহাড়ে আমাদের জন্ম। এখন জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে নগরে এসেছি। সেজন্য পাহাড়ে যেতে না পারলেও এই উৎসবকে তো ভুলে থাকা যায় না।”