নিজস্ব প্রতিবেদক
‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে’ আন্দোলনের সময় দেশে যখন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল, তখন প্রবাসীরা আন্দোলনকে বেগবান করতে ‘বড় ভূমিকা রেখেছেন’।
Published : 18 Dec 2024, 02:01 PM
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে ‘সর্বাত্মক সহযোগিতার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা।
তবে এই দায়িত্ব মূলত নির্বাচন কমিশনের বলে মন্তব্য করেছেন আইন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
আর এ কাজে নির্বাচন কমিশনকে ‘সহযোগিতা করা হবে’ বলে আশ্বাস দিয়েছেন কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বুধবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস এবং জাতীয় প্রবাসী দিবসের আলোচনা সভায় তারা কথা বলছিলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, “আপনাদের দীর্ঘ দিনের দাবি আছে ভোটাধিকারে ব্যপারে। এটাও কিন্তু আমার অধীনে না, এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যপার।“
আসিফ মাহমুদ বলেন, “নির্বাচন কমিশন মূলত টেকনিক্যাল চ্যালেঞ্জের কথা বলে। আসলে অনেক দেশে লোক আছে। আমরা কথা বলব, সর্বাত্মক চেষ্টা করবো এই প্রতিশ্রুতি আমি দিলাম।”
আসিফ মাহমুদের ভাষ্য, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে’ তাদের আন্দোলনের সময় দেশে যখন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল, তখন প্রবাসীরা আন্দোলনকে বেগবান করতে ‘বড় ভূমিকা রেখেছেন’।
তিনি বলেন, “আমি একজন নাগরিক হিসেবেও এটা দাবি করতে চাই এবং পরামর্শ দিতে চাই নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনকে। সেটা হল প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবায়নে একটা সুন্দর রুপরেখা যেন সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়।
“আমরা চাই যারা পরিবার পরিজনকে দূরে রেখে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন,তারা যেন দেশ গঠনে সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভোটাধিকার সেটা পান।“
এ সময় আসিফ নজরুল বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আগের সরকারের তুলনায় ‘২৬ শতাংশ রেমিটেন্স বৃদ্ধি পেয়েছে’।
প্রবাসীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি যখন বিভিন্ন দেশে যেতাম তখন প্রবাসীরা বলতেন যে তারা সব থেকে বেশি পছন্দ করেন ইসলামি বাংকগুলোতে টাকা পাঠাতে। আর হাসিনা সরকার লুট করার জন্য বেছে নিয়েছিল ইসলামি ব্যাংকগুলোকেই।
“৬টা ইসলামি ব্যাংক থেকে হাজার হাজার টাকা লুট করেছে তাদের প্রিয় গ্রুপ। এই ব্যাংক গুলোকে টার্গেট করে লুট করা হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের পাসপোর্ট জটিলতা ‘বাড়তে পারে’ বলে আভাস দিয়েছেন আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, “পাসপোর্টের ডিজির সাথে কথা বলেছি, ১৫ ডিসেম্বর থেকে পাসপোর্ট পাঠানো শুরু হয়েছে, অগ্রাধিকার দিয়ে মালয়েশিয়া এবং সৌদি আরবে প্রথম শুরু করেছে। উনারা বলেছে সমস্ত দেশে তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে পাসপোর্ট পাঠানো সম্ভব হবে, এমআরটি পাসপোর্ট। ই-পাসপোর্টের ব্যাপারে আপনাদের অনীহা আছে সেটা আমরা জানি। কারণ ডকুমেন্টের ব্যাপার আছে।
“ভবিষ্যতেও হয়ত পাসপোর্ট নিয়ে সমস্যা হবে। পাসপোর্ট আমার মন্ত্রণালয়ের না।আমাদের যেটা কাজ করার সেটা হল দক্ষ শ্রমিক পাঠানো, ইন্টিগ্রেটেড করার।”
অভিবাসন ব্যয় কমাতে সরকার ‘চেষ্টা করছে’ বলে জানিয়েছেন আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, “আপনারা জানেন এটা কত টাফ। আমাদের এখানে যেসব রিক্রোটিং এজেন্ট আছেন, তাদের একমাত্র লক্ষ্য থাকে কত ভালোভাবে ঠকানো যায়। গত সরকারে আমলে এ ধরনের রিক্রুটিং এজেন্টরা যাদেরকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল, তাদের অনেক সাব এজেন্ট আছে। সাপ্লাইয়ের তুলনায় ডিমান্ডটা অনেক বেশি।
“আমরা চেষ্টা করছি বায়রাতে একটা প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃত্ব যেন আসে।“
বিদেশে দূতাবাসে প্রবাসীরা যাতে আগামীতে হয়রানির শিকার না হয় সেই বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।