রেল দুর্ঘটনা রোধে সতর্ক থাকতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

“আপনারা দেখেছেন, ভারতে কি ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটে গেছে! এরকম ভয়াবহ দুর্ঘটনা কিন্তু সচরাচর দেখা যায় না।”

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2023, 06:20 AM
Updated : 4 June 2023, 06:20 AM

ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৮৮ জনের প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করে রেল দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।   

তিনি বলেছেন, “আমি বলব, যারা রেলগাড়ি পরিচালনা করেন, তাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা, দক্ষ লোকবল যথেষ্ট নেওয়া, সেই সাথে ট্রেনে যারা চড়বেন বা রেলের পাশ দিয়ে হাঁটবেন, দোকান পসরা বসায়ে রাখেন, কোনো রেলগেট পড়লে গাড়ি নিয়ে যাতায়াতে সব কিছুতেই সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, এ কথাটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।”

রোববার সকালে চিলাহাটি-ঢাকা-চিলাহাটি রুটে নতুন আন্তঃনগর ট্রেনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর এই সতর্ক বার্তা আসে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

রেল যোগাযোগের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, “রেল যোগাযোগের যেটা সুবিধা হল, অল্প খরচে মানুষ যোগাযোগ করতে পারে, যেতে পারে, আমারদায়ক ভ্রমণ করতে পারে।

“তবে একটা বিষয় সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে, রেললাইনের ওপর যদি কেউ মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে কথা বলতে যায়, অ্যাকসিডেন্ট হয়, রেলের গেট পড়া থাকলেও ফাঁক দিয়ে গাড়ি ঢুকিয়ে দিয়ে তারপর অ্যাকসিডেন্ট হয়, এইসব ব্যাপারগুলিতে সবাইকে কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে।”

শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আপনারা দেখেছেন, ভারতে কি ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটে গেছে! এরকম ভয়াবহ দুর্ঘটনা কিন্তু সচরাচর দেখা যায় না। ভারতে সবই তো ইলেক্ট্রিক ট্রেন। তিনটা রেল একসাথে দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে প্রায় ২৮৮ জন মানুষ মারা গেছে।

“যারা মৃত্যুবরণ করেছে, আমি তাদের প্রতি শোক জানাচ্ছি। তাদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমি চিঠি দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমার বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে আমার সরকারের পক্ষ থেকে আমি শোকবার্তা তাকে পাঠিয়েছি।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সত্যি খুব দুঃখজনক। আমাদের দুইজন বাঙালিও সেখানে আহত অবস্থায় আছে। আমাদের কোনো বাঙালির নিহতের কোনো খবর আমরা পাইনি। তারপরও আমরা দুঃশ্চিন্তগ্রস্ত যে এরকম ভয়াবহ দুর্ঘটনা, এটা সত্যিই খুব চিন্তার বিষয়।”

আমের মৌসুমে ম্যাংগো এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করায় বাংলাদেশ রেলওয়েকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষই আমাদের উত্তরাঞ্চলের আম পাবে, তার সাথে আমাদের বন্ধু প্রতীম দেশগুলোতেও আমরা আম পাঠাব, আমাদের প্রতিবেশীগুলোতেও পাঠাব।” 

এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আন্তঃনগর চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন, যে ট্রেন ছিল নীলফামারীবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি।

২০০৭ সালে সৈয়দপুর থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন রুটে চালু হয় ‘নীলসাগর এক্সপ্রেস’। ২০১৫ সাল থেকে ট্রেনটি চিলাহাটি থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যাতায়াত শুরু করে।

কিন্তু ট্রেনটি রাতে চলে বলে দিনের বেলা আরেকটি ট্রেন চালুর দাবি জানিয়ে আসছিলেন নীলফামারীবাসী। দাবি আদায়ে বিভিন্ন কর্মসূচিও তারা পালন করেছেন।

শনিবার বাদে সপ্তাহে ছয় দিন চলাচল করবে চিলাহাটি-ঢাকা-চিলাহাটি রুটে চলাচল করবে নতুন এই আন্তঃনগর ট্রেন।

সকাল ৬টায় চিলাহাটি স্টেশন ছেড়ে ট্রেনটি ঢাকা পৌঁছবে বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে। আবার বিকাল সোয়া ৪টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে চিলাহাটি পৌঁছবে রাত পৌনে ২টায়।

মাঝে ডোমার, নীলফামারী, সৈয়দপুর, পার্বতীপুর, জয়পুরহাট, সান্তাহার, ঈশ্বরদী বাইপাস ও বিমানবন্দর স্টেশনে থামবে আন্তঃনগর চিলাহাটি এক্সপ্রেস। এ ট্রেনের ১১টি বগিতে আসন সংখ্যা সাড়ে সাতশ।