কারা অধিদপ্তর থেকে হাই কোর্টে পাঠানো এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশের কারাগারগুলোতে সাজা খাটা শেষে প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় ১৫৭ জন বিদেশি রয়েছেন।
Published : 29 Feb 2024, 02:59 PM
দেশের কারাগারগুলোতে বিভিন্ন অপরাধে সাজা খাটা শেষে প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় থাকা ১৫৭ জন বিদেশিকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
এ বিষয়ে করা একটি রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়।
রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট বিভূতি তরফদার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
গত ২১ জানুয়ারি কারা অধিদপ্তর থেকে হাই কোর্টে পাঠানো এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশের কারাগারগুলোতে বিভিন্ন অপরাধের সাজা খাটা শেষে ১৫৭ জন বিদেশি বন্দি প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় রয়েছেন।
এর মধ্যে ১৫০ জন ভারতের, পাঁচজন মিয়ানমারের ও একজন করে পাকিস্তান ও নেপালের নাগরিক রয়েছেন। ১৫৭ জনের মধ্যে ১৯ জন নারী।
কারাবন্দি এই বিদেশি নাগরিকদের সাধারণত অনুপ্রবেশের দায়ে ‘দি কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২‘, ‘পাসপোর্ট আইন, ১৯৫২‘ এবং ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন‘ এর মামলায় সাজা দেওয়া হয়।
সাজা ভোগ করা বিদেশি বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে গত ১১ জানুয়ারি হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার। ১৫ জানুয়ারি ওই আবেদনের ওপর শুনানি হয়। ওইদিন সাজাভোগ শেষে কারাগারে থাকা বিদেশিদের তালিকা চেয়েছিল আদালত। তার পরিপ্রেক্ষিতে কারা অধিদপ্তর এই ১৫৭ জনের তালিকা দেয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনায় ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরার কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে আটক করে বিজিবি। সেদিনই তার নামে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করেন বিজিবির হাবিলদার মো. রশিদ প্রধান।
তদন্তের পর ওই বছরের ৪ এপ্রিল অভিযোগপত্র জমা দেন শ্রীমঙ্গল থানার এসআই কামরুল হাসান। অভিযোগপত্র জমার দিনই ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪২ ধারা ও দি কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২ আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন মৌলভীবাজারের চতুর্থ বিচারিক হাকিম এম. মিজবাহ উর রহমান। সেইসঙ্গে অনুপ্রবেশের দোষ স্বীকার করায় সেদিনই গোবিন্দকে ২ মাস ১০ দিনের কারাদণ্ড দেন বিচারক।
রায়ে বলা হয়, আসামি মামলা সংশ্লিষ্টতায় আগে হাজতবাস করে থাকলে সেই সময় সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে। সে অনুযায়ী রায় ঘোষণা পর্যন্ত গোবিন্দ উড়িয়া চার দিন বেশি হাজত বাস করেন।
আসামি যেহেতু ইতোমধ্যে সাজার মেয়াদ ভোগ করে ফেলেছেন, সেজন্য তাকে ভারতে ফেরত পাঠাতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু ওই রায়ের পর দুই বছর পার হলেও ওই ভারতীয় নাগরিক কারাগার থেকে মুক্তি পাননি জানিয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
সেই প্রতিবেদন যুক্ত করে এ বছরের ১১ জানুয়ারি রিট আবেদন করেন আইনজীবী বিভূতি তরফদার।
আরও পড়ুন