ভোরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
Published : 24 Mar 2025, 03:30 PM
বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ৫৪তম বার্ষিকীতে জাতির বীর সন্তানদের স্মরণে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সোমবার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচি তুলে ধরা হয়।
ঢাকাসহ সারাদেশে ২৬ মার্চে দিবসটির উদযাপন শুরু হবে একত্রিশবার তোপধ্বনির মাধ্যমে।
এরপর ভোরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা শ্রদ্ধা জানাবেন।
পাশাপাশি বিদেশি কূটনীতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং সাধারণ মানুষে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। একইভাবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের স্মৃতিসৌধেও শ্রদ্ধা জানানো হবে।
দেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শিক্ষার্থীদের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন রেখেছে মন্ত্রণালয়।
সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। তবে আগের দিন কালরাতে আলোকসজ্জা করা যাবে না। ঢাকা ও অন্যান্য শহরের প্রধান সড়ক ও সড়ক বিভাজক জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে।
দিনটিতে সরকারি ছুটি থাকবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা দিবস উপলক্ষে বাণী দেবেন।
সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র, নিবন্ধ ও সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ করবে, এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করবে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, প্রামাণ্যচিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন রেখেছে।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফুটবল, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট, কাবাডি ও হাডুডুসহ বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।
এছাড়াও মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবেভ
ডাক বিভাগ স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করবে। দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে।
হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে আশ্রয়কেন্দ্র ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে। দেশের প্রতিটি শিশুপার্ক ও জাদুঘর বিনামূল্যে দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকতে দিনটিতে।।
চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দর এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বরিশাল ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজগুলো সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করা হবে।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের বজ্রবাণীর পর বাঙালির মুক্তির আন্দোলনের শ্বাসরোধ করতে ২৫ মার্চ রাতে অপারেশন সার্চলাইটের নামে ঢাকাকে মৃত্যুপুরী বানিয়ে ফেলে পাকিস্তানি বাহিনী।
রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পিলখানা ইপিআরসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিরোধ হলেও পাকিস্তানি সেনাদের ভারী অস্ত্রের সামনে তা টিকেনি বেশিক্ষণ। মেশিনগান, কামানের গোলার পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরু হয় শহরজুড়ে।
পৈশাচিক বর্বরতার মধ্যেই ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আটক করে পাকিস্তানি বাহিনী। তার আগেই বাংলাদেশকে ‘স্বাধীন’ ঘোষণা করে দেশবাসীর উদ্দেশে তারবার্তা পাঠিয়ে যান তিনি, স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার হয় ইপিআরের ওয়্যারলেস বার্তায়।
মরণপণ লড়াই চলে পরের নয়টি মাস। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত, অসংখ্য নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ধরা দেয় বিজয়। বাঙালির আত্মত্যাগ পরিণতি পায় বিশ্ব মানচিত্রে ‘বাংলাদেশ’ নামের এক নতুন রাষ্ট্রের অবয়বে।