জাহানারা ইমাম স্মরণে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় স্মারক বক্তৃতা ও আলোচনা সভা।
Published : 26 Jun 2024, 10:04 PM
চলতি বছর ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক’ পেয়েছেন বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজা খানম ও বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এম্পাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপল’-এলকপ।
বুধবার শহীদ জননীর ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে স্মারক বক্তৃতা ও আলোচনা সভায় তাদের হাতে পদক তুলে দেওয়া হয়।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে এলকপের সভাপতি মিজানুর রহমান ‘জাহানার ইমাম স্মৃতিপদক’ গ্রহণ করেন।
আলোচনা সভায় মাহফুজা খানম বলেন, “বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য সারা দেশে ৭৩টি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচার আরম্ভ করেছিলেন। কিন্তু পঁচাত্তরের পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়।
“পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য যে সাহসী উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সেই আন্দোলন আমরা এখনও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা যে রকম বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, এখনও তা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি।”
বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা রুমীর মা জাহানারা ইমাম নব্বইয়ের দশকে রাজাকার ও আল-বদরদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন। ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় 'শহীদ জননী' হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠা এ নারী পরিণত হন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলনের প্রতীকে।
বুধবার তার মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মারক বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের। কিন্তু অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধান বিচারপতির লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল।
প্রধান বিচারপতি লিখিত বক্তব্যে বলেন, “পঁচাত্তর পরবর্তী ঘোর অন্ধকার মুহূর্তগুলোতে আমাদের ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। অমর শহীদদের মুছে দেওয়া হয়েছিল ইতিহাসের পাতা থেকে। অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছিল নির্মম বিকৃতির মাধ্যমে।…ভীষণ ত্রাসের সেই দুঃসহ সময়ে আঁচলে শহীদ সন্তানের রক্তের দাগ নিয়ে একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের আকাঙ্ক্ষায় উন্মুখ থেকেছেন যে মানুষটি, তিনি শহীদজননী জাহানারা ইমাম।”
সভায় অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটর উপদেষ্টা মণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সভাপতি শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সহসভাপতি এম সাঈদ আহমেদ রাজা বক্তব্য দেন।
এর আগে সকালে মিরপুরে জাহানারা ইমামের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতারা।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র শ্রদ্ধা নিবেদন করে।