Published : 18 Dec 2024, 09:12 PM
টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা জুবায়ের আহমদ ও মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রথমে তিনজন, পরে চারজনের মৃত্যুর কথা জানা গেলেও পুলিশ সন্ধ্যা পর্যন্ত দুইজনের লাশ পাওয়ার তথ্য দিয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের ‘কোনোভাবেই ছাড় নয়’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বুধবার ভোর রাতে ইজতেমা মাঠের দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। জোড় ইজতেমা পালন করা নিয়ে বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ।
এতে তিনজন নিহত হওয়ার কথা সকালেই জানান গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল করিম খান।
পরে বুধবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মাওলানা জুবায়ের আহমদের অনুসারীদের অন্যতম নেতা মামুনুল হক বলেন, এই সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হয়েছেন চারজন।
তিনি বলেন, সাদপন্থির ‘সন্ত্রাসীরা’ ঘুমন্ত লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটায়। তবে নিহত চারজনের নাম তিনি জানাতে পারেননি।
এর সূত্র ধরে পরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও বৈঠকে চারজনের মৃত্যুর কথা বলেন।
তবে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এনএম নাসির উদ্দিন বুধবার রাতেও বলেছেন, তারা তিনজন নিহত হওয়ার খবরই পেয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা জানি তিনজন মারা গেছেন। তার মধ্যে দুইজনের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।”
এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেলাল হেসেনের (৫০) এবং টঙ্গীর আহসানউল্লাহ মাস্টার হাসপাতালে আমিনুল ইসলাম বাচ্চুর (৬০) লাশ রয়েছে।
উপ কমিশনার বলেন, “তাইজুল ইসলাম নামের একজনের রক্তাক্ত ছবি পেয়েছি। গ্রামের বাড়ি বগুড়া জানতে পেরেছি, কিন্তু তিনি কোথায় আছেন সে ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই।”
এদিকে এই ঘটনায় জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “যারা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে, খুনিদের ছাড় দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই। যারা প্রকৃত দোষী তাদের আইনের আওতায় দ্রুত আনা হবে।”
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি বৈঠকে তুলে ধরার কথা জানিয়ে মামুনুল হক বলেছেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাদের এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন।
সরকারকে চ্যালেঞ্জ করে সাদপন্থিরা মাঠে ঢুকে পড়ে বলে মামুনুল হকের অভিযোগ।
সরকার মিছিল-জমায়েতে বিধিনিষেধ ধারা জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাতেও সমর্থন দেন তিনি।
“দাবি দাওয়া যাই থাকুক একটা আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা হবে, যা পূর্ব নির্ধারিত বুধবারের বৈঠকে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা হয়।”
এই ‘অপশক্তিকে’ প্রতিহত করা শুধু আলেম-ওলামাদের কাজ নয়, রাংলাদেশের রাষ্ট্র এবং প্রশাসনের কাজ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“২০১৮ সালে এভাবে হামলা চালিয়ে তারা ৫ হাজার মানুষকে মারাত্মক আহত করেছিল, হত্যা করেছিল। কিন্তু তখন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি রহস্যজনক কারণে। আবার তার পুনরাবৃত্তি। এই জন্য সাদপন্থিদের একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছি।
“তারা ছদ্মবেশ ধারণ করে এবং ইসলামবিরোধী আন্তর্জাতিক মহলের সোর্স ও এজেন্ট হিসাবে বাংলাদেশের মধ্যে এবং ইসলামের সুমহান কাজ দাওয়াত এবং তাবলীগের কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কাজ করছে।”