Published : 28 Apr 2025, 10:00 PM
পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়া, ঝুঁকি ভাতা ও দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ এবং আইন পরিবর্তনসহ ১১ দাবিতে মানববন্ধন করেছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
তাদের এ দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছেন শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা কয়েকটি সংগঠনের নেতারা।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম), বাংলাদেশ স্যানিটেশন ওয়ার্কার্স ফোরাম এবং নাগরিক উদ্যোগ যৌথভাবে মানববন্ধনের আয়োজন করে।
এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শ্রম অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসাইন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা স্বাস্থ্যঝুঁকি, আইনি জটিলতা, আবাসন সমস্যা, মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতা ও নানা ধরনের সামাজিক বঞ্চনার মধ্যে কাজ করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরই সবচেয়ে মর্যাদাহীন এবং পেশাগত স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। এসব ঝুঁকি প্রশমন, উপযুক্ত কর্মপরিবেশ এবং সুস্থতার জন্য সুরক্ষা সামগ্রী ও যথাযথ প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তারা বলেন, তাদের চাকরির নিশ্চয়তা, ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করাও জরুরি। পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও পাদুকাশ্রমিকসহ বিভিন্ন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত দলিতদের শ্রমিক হিসেবে মর্যাদা নেই। তাদের এ মর্যাদা দেওয়া জরুরি।
বিডিইআরএমের সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাসের সঞ্চালনায় এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বাসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য বাবর চৌধুরী।
১১ দফায় যা যা আছে
>> পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের একটি বেতন কাঠামো প্রণয়নের মাধ্যমে ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা ও শ্রম আইনের মাধ্যমে তাদের অধিকার সুরক্ষিত করা।
>> পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বন্ধ করে চাকরি স্থায়ীকরণ,‘নো-ওয়ার্ক, নো-পে’ প্রথা বন্ধ করা।
>> পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাদের ঐতিহ্যগত অবদান ও প্রান্তিকতার বিষয়গুলো বিবেচনা করে চাকুরির নিয়োগে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া।
>> নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা করা।
>> শ্রম আইন অনুযায়ী নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের মাতৃত্বকালীন ছুটির বিধান চালু করা।
>> খালি হাতে সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার নিষিদ্ধ করা,সেপটিক ট্যাংকে পড়ে মৃত্যুর পরিসংখ্যান রাখা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান করা।
>> পরিচ্ছন্নতা কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী পর্যাপ্ত এবং নিয়মিত সরবরাহ করা।
>> পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের চায়ের দোকান, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, সেলুন এবং মন্দিরে প্রবেশে বাধা দূর করা।
>> পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা এবং তাদের আবাসস্থল থেকে উচ্ছেদ বন্ধ করা।
>> পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সন্তানদের যোগ্যতা থাকলে তারা যেন সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে জাতপাত ও পেশাগত পরিচয়ের কারণে বৈষম্যের শিকার না হয় তা নিশ্চিত এবং বিদেশে চাকরির সুযোগ তৈরি করা।
>> পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরকে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা।