“নারীর প্রতি বিদ্বেষের এসব ঘটনা নতুন কিছু না। এই সমাজতো নারী বিদ্বেষী সমাজ,” বলেছেন নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান।
Published : 08 Mar 2025, 01:41 AM
‘বৈষম্য’ ও ‘নিপীড়নের’ বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নারীদের অংশগ্রহণ ও ভূমিকা নিয়ে আলোচনা দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। সেখানে জায়গা করে নিচ্ছে নারীর প্রতি প্রকাশ্যে বিদ্বেষ।
ক্ষমতার পালাবদলের পর নারীরা সমানুপাতিক হারে নেতৃত্বের জায়গায় আসতে না পারার আক্ষেপ যখন শোনা যাচ্ছে, তখন ‘মব’ সৃষ্টি করে প্রকাশ্যে মারমুখী আচরণ ও বিদ্বেষের ঘটনা নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে।
কয়েক বছর ধরে নারীর প্রতি সহিংসতার বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর অভিজ্ঞতা নারী অধিকার কর্মীদের হতাশ করেছে। কারো কারো দাবি, নারীর প্রতি প্রকাশ্যে বিদ্বেষ ‘বেড়েছে’।
তারা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ এখনও দেখা যাচ্ছে না।
মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পরে নারী বিদ্বেষ প্রকাশ্য হয়ে যাচ্ছে। আগে এ বিদ্বেষ প্রচ্ছন্ন ছিল। ভায়োলেন্স তখনও ছিল; নারীর রাজনৈতিক অধিকার ছিল না, সামাজিক অধিকার ছিল না।
“কিন্তু (গণঅভ্যুত্থানের পর) একটা মোরাল পুলিশিং করা হচ্ছে, নারী বিদ্বেষের কারণে। এরকম পোশাক পরতে পারবা না, এ রকম হাঁটতে পারবা না, টিপ পরতে পারবে না, ফুটবল খেললে পিটিয়ে মেরে ফেলা হবে, ভেঙে দেওয়া হবে বাড়িঘর।”
তিনি বলেন, “যে ইস্যুগুলো নিয়ে আমরা এতদিন আন্দোলন করছিলাম সেই ইস্যুগুলোর সাথে আরও একটা জিনিস যুক্ত হল, সেটা হল নারী বিদ্বেষ। নারী বিদ্বেষটা এখন এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, যেটা আগে এতটা ছিল না। এইটুকু আমি পরিবর্তন বলতে পারি।”
সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ভুক্তভোগীকে সহায়তা দিতে নতুন উদ্যোগ হিসেবে ‘কুইক রেসপন্স টিম’ গঠন করা হয়েছে।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নারীর প্রতি বিদ্বেষ নিরসনের জন্য অবশ্যই আমাদের পক্ষ থেকে একটা প্রচেষ্টা থাকবে। কিন্তু এটা একার পক্ষেতো সম্ভব না, দরকার একটা সম্মলিত প্রচেষ্টা।”
কুইক রেসপন্স টিম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা নতুন প্রকল্প। এখনও কাজ শুরু হয়নি। এটা এখনও উদ্যোগ পর্যায়ে আছে।”
৮ মার্চ নারী দিবসের ঠিক এক সপ্তাহ আগে রাজধানীর লালমাটিয়ায় ধূমপানের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ওই দুই তরুণীর ওপর ‘মব’ সৃষ্টি করে হামলা নারীর প্রতি বিদ্বেষের আরেকটি প্রকাশ্য ঘটনা।
এরপর গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার পদে কর্মরত মোস্তফা আসিফের হাতে এক ছাত্রীর পোশাক নিয়ে হেনস্তার শিকার হওয়ার ঘটনা বিদ্বেষের আরেকটি দিক সামনে এনেছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর করা মামলায় ওই কর্মচারী গ্রেফতারের পর ‘তৌহিদী জনতা’ ব্যানারে তাকে মুক্ত করতে শাহবাগ থানায় বিক্ষোভ হয়েছে। শুধু তাই নয়, গ্রেপ্তারের পরদিন জামিনে মুক্তির পর পাগড়ি পরিয়ে ফুলের মালায় বরণ করা হয়েছে অভিযুক্তকে।
গত ২৮ জানুয়ারি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় নারী ফুটবল খেলা বন্ধ করতে মাঠে দেওয়া টিনের বেড়া ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে একদল লোকের বিরুদ্ধে। পরে সেই ম্যাচটি বাতিল করা হয়।
সেদিনই দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় ‘তৌহিদী জনতা’র সঙ্গে আয়োজক কমিটির সদস্যদের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হওয়ায় নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ম্যাচটি ফের আয়োজন করার নির্দেশ দেয় খোদ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, “অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নারীর প্রতি যৌন নিপীড়ন, হয়রানি, হিংসা-বিদ্বেষসহ বিভিন্ন ধরনের নিপীড়নের ঘটনা বেড়ে চলেছে। নারীরা সমাজের বিভিন্ন স্তরে নানাভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছেন। এমন অবস্থায় প্রতিটি নিপীড়ন ও অন্যায্যতার সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার এবং শাস্তি দিতে হবে।”
বিভিন্ন ঘটনায় নিজের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে ফওজিয়া মোসলেম বলেন, “এটা নারী বিরোধী গোষ্ঠিগুলোর নারী সমাজকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটা প্রচেষ্টা। নারীদের এটার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। সমাজকেও এটার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে, রাষ্ট্রকে আইনগত অবস্থান নিতে হবে। রাষ্ট্রতো নারী-পুরুষের সামান অধিকারের কথা ঘোষণা করেছে।”
গত কয়েকবছর ধরেই নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ‘নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ ২০২৪’–এর তথ্য বলছে, দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার মধ্যে যৌন সহিংসতার হার বেড়ে ২৮ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দশ বছর আগে ২০১৫ সালে এ হার ছিল ২৭ দশমিক ২ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) করা জরিপে দেখা যায়, “যৌন সহিংসতা বাড়লেও শারীরিক সহিংসতা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ, যা আগের জরিপে ছিল ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ।”
রাজশাহী ও গাজীপুরের শিক্ষার্থী, পোশাক ও পরিবহন খাতের কর্মী ও নাগরিক সমাজের ৩১১ জন নারী-পুরুষকে নিয়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত একটি গবেষণা করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
মানবাধিকার সংগঠনটির এই গবেষণার তথ্য গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থী, শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৪৯ শতাংশ নারী শারীরিক, মানসিক ও যৌন সহিংসতার অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন।
এই নারীরা মনে করেন, ৯০ শতাংশ নারী হয়রানির শিকার হন কর্মক্ষেত্রে ও গণপরিবহনে। কিন্তু লোকলজ্জা, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাসহ নানা কারণে অভিযোগ করতে বাধার মুখে পড়েন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ‘বেফাঁস’ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে গত ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের ছাত্রীদের বিক্ষোভ ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে দিয়েছিল নতুন মাত্রা।
গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পৃক্তদের মতে, নারীরা তখন রসদ যুগিয়ে, সরাসরি রাজপথের আন্দোলনে অংশ নিয়ে এ আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানে রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করেছে।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। দেশে ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সফল আন্দোলনে ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশের হাল ধরে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যে সরকার রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত সংস্কারে ১১টি সংস্কার কমিশন করে, যার মধ্যে অন্যতম নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন।
২৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন-এইড বাংলাদেশ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক বলেন, অভ্যুত্থানের পর নেতৃত্বের জায়গা থেকে সরতে নারীদের ‘চাপ দিয়ে বাধ্য করা হয়েছে’।
“জুলাইয়ের আন্দোলনে মেয়েরাই রোকেয়া হল থেকে সবার আগে বের হল। কিন্তু পরে এত দ্রুত মেয়েরা সরে গেল কেন? জায়গা কেউ ইচ্ছে করে ছেড়ে দেয়নি। চাপ সৃষ্টি করে জায়গা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।”
নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী শিরীন পারভিন হক বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নারীর প্রতি বিদ্বেষের এসব ঘটনা নতুন কিছু না। এই সমাজতো নারী বিদ্বেষী সমাজ। এটা কি নতুন কথা? নারীকে মানুষ হিসাবে চিনতে, দেখতে, শ্রদ্ধা করতে শিখতে হবে।”
সংস্কার কমিশনের সুপারিশে নারীর প্রতি বিদ্বেষের বিষয়গুলো ‘অবশ্যই আনতে’ হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এ বিষয়গুলো অবশ্যই আনতে হবে। আমাদেরতো অনেকগুলো বিষয় নিয়ে সুপারিশ তৈরি হচ্ছে। কারণ নারী বিষয়টাতো ক্রস কাটিং ইস্যু, এটা সব কিছুর মধ্যেই আমাদের আনতে হবে।
“অন্যান্য কমিশনগুলো যে সুপারিশ করছে, সেগুলোও আমাদের দেখে বিশ্লেষণ করতে হবে, ওখানে কোনো গ্যাপ রইলো কি-না, সেখানেও আমরা কি ধরনের বিশ্লেষণ, সুপারিশ যুক্ত করতে পারি।”
বৃহস্পতিবার নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সঙ্গে সভা করেছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক বলেছেন, ওই সভায় উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ নারী বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বিস্তৃত আকারে অভিযান চালানোর বিষয়টি সামনে এনেছেন।
তবে সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে চাননি সংস্কার কমিশনের প্রধান। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হবে।”
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন সংক্রান্ত কাজে সভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায়’ ওই সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবগত নন।
মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম শাখার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ মনিটরিং অধিশাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব প্রকাশ কান্তি চৌধুরীও ওই সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানেন না।
প্রশাসন শাখার যুগ্মসচিব মো. ফিরোজ উদ্দিন খলিফা ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলামও সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি।
নারী প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ ঠেকাতে মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ জানতে চাইলে প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা একটা কুইক রেস্পন্স টিম করেছি। যে সমস্ত জায়গায় নারীর প্রতি সহিংসতা হচ্ছে এগুলো আমরা সঙ্গে সঙ্গে টেকওভার করি, ভুক্তভোগী যেন সার্ভিসটা ঠিকভাবে পান, লিগ্যাল হোক, মেডিকেল ট্রিটমেন্ট হোক।
“আমরা দ্রুত তাদের ফ্যাসিলিটেট করা চেষ্টা করছি আমাদের মন্ত্রণালয়ের থেকে।”
তিনি বলেন, “এটা (কুইক রেসপন্স টিম) নিয়ে আমরা বেশ কিছু জায়গায় পাইলট বেসিসে কাজ করে ভালো ফলাফল পেয়েছি। এটাকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে যাচ্ছি। সেটা হল রেগুলার কর্মসূচির মধ্যে এটা নিয়ে আসা। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আমরা সচেতন ও সতর্ক আছি, যাতে এ বিষয়গুলো কমে আসে।”
মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম মনে করেন, সাম্প্রতিক সময়ে নারীর প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, পরবর্তীতে সেগুলোর বিষয়ে গণঅভ্যুত্থানে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে দৃষ্টি দিতে হবে।
“বৈষম্যবিহীন সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে তারা (গণঅভ্যুত্থানের নেতারা) আন্দোলন করেছেন। নারী পুরুষের বৈষম্য বৈষম্যের একটা বিশেষ দিক। সহিংসতার মাধ্যমে নারীকে অবমাননাকর পরিস্থিতিতে ঠেলে দিলে কখনো বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে না।”
অভ্যুত্থানের সামনের কাতারে থাকাদের নেতৃত্বে সদ্য আত্মপ্রকাশ করা রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ‘নারী প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ ঠেকাতে’ রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের কথা বলেছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নারীদের সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার এবং সেটাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার যে সংস্কৃতি রয়েছে সেটাকে পরিবর্তন করার জন্য আমরা রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের কথা বলছি।
“আমরা বিদ্যমান যে রাজনৈতিক কাঠামো আছে, সেটারও পরিবর্তনের কথা বলেছি। আমরা দেখেছি, নানান ধরনের রাজনৈতিক দল সে বিষয়গুলোকে ভালো চোখে দেখছে না। কিন্তু আমরা মনে করি, এই রাজনৈতিক সংস্কৃতির যদি পরিবর্তন ঘটে, তাহলে দীর্ঘমেয়াদে নারীদের নেতৃত্বের জায়গায় নিয়ে আসা সম্ভব।”
সামান্তা শারমিন বলেন, “এনসিপির যে মূল কার্যক্রম, সেখানে সকলকে নিয়ে ইনক্লুসিভ রাজনীতির কথা আমরা বলছি। ৫১ শতাংশ নারী ভোটার, এই জায়গাটা ভুলে গেলে আমাদের চলবে না। শুধুমাত্র তাদেরকে ভোটার এবং ভোটব্যাংক হিসেবে চিন্তা করলেও এই জায়গাটা সমাধান হবে না বলেই আমরা মনে করি।
“নারীদের শিক্ষা, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য তাদের মনন জগৎ, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যেভাবে আসলে ট্রমাটাইজ হয়ে আছে, সেখান থেকে উত্তরণের জন্য যথাযথ স্বাস্থ্যগত পলিসি নেওয়া, নানামুখী শিক্ষার দিকে তাদেরকে ফ্যাসিলিটেট করার জন্য আমাদের ভূমিকা থাকবে।”
যদিও মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেমের মতে, নারী আন্দোলন কোন দলীয় রাজনৈতিক আন্দোলন হলে সেটা নারী আন্দোলন হয় না।
“নারী আন্দোলন একটি ধারাবাহিক বিষয়। এটা যুগ যুগ ধরে চলছে। গণঅভ্যুত্থানের আগের নারী আন্দোলন ছিল। নারী আন্দোলন কোনো দলীয় রাজনীতি না।”