Published : 04 May 2025, 08:20 PM
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ‘অর্থ আত্মসাতের’ অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
কোম্পানিটির চেয়ারম্যান মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এর কাছে ‘তথ্য গোপন করে বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে ভাইয়ের জমি কেনার মাধ্যমে এই অর্থ আত্মসাতের’ অভিযোগ করা হয়েছে।
রোববার দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার দুদকের উপপরিচালক শেখ গোলাম মাওলা মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলায় তার ছেলে সাইফুল আলম ও ভাই মো. জসিম উদ্দিনও আসামি। ঘটনার সময় তারা দুজন যথাক্রমে মোরশেদ আলমের বেঙ্গল গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল কনসেপ্ট অ্যান্ড হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালক।
দুদকের অভিযোগ, ২০১৬ সালে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার গণিপুর মৌজায় শূন্য দশমিক ৮৯৬ একর জমি ও একটি নির্মাণাধীন ১৫ তলা ভবনের চতুর্থ তলায় বাণিজ্যিক জায়গা কিনে।
জমিটির মালিক ছিলেন জসিম উদ্দিন। সাইফুল আলম ছিলেন জমি বিক্রির দায়িত্বপ্রাপ্ত। ন্যাশনাল লাইফের জন্য জমি কেনার ক্ষেত্রে এমন আত্মীয়-সম্পর্ক থাকায় ‘স্বার্থের দ্বন্দ্ব’ তৈরি হয়, যা তারা ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আইডিআরএ-এর কাছে জমি কেনার পূর্বানুমোদনের সময় ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক অস্বীকার করে মিথ্যা’ প্রত্যয়ন দেওয়া হয়, যাতে বলা হয়েছিল, কোম্পানিটির সঙ্গে কোনো পরিচালক বা উদ্যোক্তার সম্পৃক্ততা নেই।
জমির প্রকৃত বাজারমূল্য ছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫৫ টাকা। অথচ, তা মূল্যায়ন প্রতিবেদনে ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা দেখানো হয়। এই মিথ্যা মূল্যায়নের ভিত্তিতে ন্যাশনাল লাইফ বেঙ্গল কনসেপ্টের অনুকূলে চেক দিয়ে পুরো অর্থ পরিশোধ করে। এভাবে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৬ হাজার ১৪৪ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দুদকের।
এ ঘটনায় আইডিআরএ-কে ‘মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য সরবরাহ, সরকারি মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপেক্ষা ও জালিয়াতির’ মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগও আনা হয়েছে।
শিল্পগোষ্ঠী বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম আওয়ামী লীগের টিকেটে নোয়াখালী-২ আসন থেকে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।
৯ এপ্রিল তাকে ঢাকার গুলশান থেকে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ৫ অগাস্ট অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী-এমপি, দলের নেতাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা, হত্যা ও হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগে মামলা হয়েছে।
এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনও বিগত সরকারের সময় সুবিধা পাওয়া শিল্প গ্রুপ, মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের বিরুদ্ধে ‘অর্থ পাচার ও অবৈধভাবে’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ কয়েকজন বিরুদ্ধে মামলা করেছে।