চলতি বছর ১১ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন মোট ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন।
Published : 30 Jun 2024, 11:07 AM
সাত-সকালে প্রবল বৃষ্টি মাথায় করে পরীক্ষাকেন্দ্রে ছুটতে হল এইচএসসি পরীক্ষার্থীদেরকে। বৃষ্টির কারণে রাজধানীর পথে পথে যানবাহন সঙ্কট, যানজটের কারণে সন্তানদের কেন্দ্রে নেওয়ার পথে ভোগান্তিও পোহালেন অভিভাবকরা।
এমন বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যে রোববার শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। সিলেট বাদে দেশের ১০টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৭৩ শিক্ষার্থী এ বছর পরীক্ষায় বসেছে।
এদিন সকাল ১০টায় বাংলা (আবশ্যিক) প্রথমপত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা শুরু হয়।
২০২৪ সালের পুনর্বিন্যাস করা সূচি অনুযায়ী সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও সময়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
এবার পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ৫০ হাজার ২৮১ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৫০৯ জন। তাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে মোট ২ হাজার ৭২৫টি কেন্দ্রে।
বন্যা পরিস্থিতির কারণে সিলেট বিভাগের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। পরদিন ৯ জুলাই ওই বোর্ডের ৮২ হাজার ৪১৭ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় বসবে।
বাকি আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে এবার মোট পরীক্ষার্থী ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৭৩ জন।
পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে শিক্ষার্থীদের আসন গ্রহণ করার বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডগুলোর নির্দেশনা ছিল। সেই অনুযায়ী, সকালে ঢাকার কেন্দ্রগুলোতে নির্ধারিত সময়ের আগেই পরীক্ষার্থীদের ঢুকতে দেখা যায়।
মিরপুরের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে সকাল পৌনে ৯টা থেকে পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে ঢুকতে শুরু করে।
কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষায় থাকা মিনতি রাজবংশী বলেন, “ভাষানটেক সরকারি কলেজের ছাত্র আমার ভাই। প্রস্তুতি ভালোই হয়েছে। আশা করছি পরীক্ষাও ভালো হবে।”
ছেলেকে নিয়ে কেন্দ্রে আসা আরেক অভিভাবক আফরোজা আক্তার বৃষ্টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “প্রথম পরীক্ষা, তাই ছেলেকে নিয়ে আসলাম। অপেক্ষা করছি, পরীক্ষা শেষ হলে নিয়ে যাব। এই সময়ে পরীক্ষার রুটিন নিয়ে মনে হয় আরেকটু ভাবার দরকার ছিল। আসা-যাওয়ার পথে বৃষ্টি হলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হবে, মনোযোগে সমস্যা হবে।”
এইচএসসিতে এবারের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১১ অগাস্ট। ১২ অগাস্ট থেকে শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা, শেষ হবে ২১ অগাস্ট।
প্রবল বর্ষণ আর বন্যার কারণে গত বছরও তিন বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ১০ দিন পেছাতে হয়েছিল।
ওই বছর অন্য সব বোর্ডের পরীক্ষা ১৭ অগাস্ট শুরু হলেও চট্টগ্রাম, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় ২৭ অগাস্ট থেকে। বন্যার কারণে ২০২২ সালেও পরীক্ষা পিছিয়ে নভেম্বরে হয়েছিল।
২০১০ সাল থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এসএসসি এবং এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়ে আসছিল। তবে কোভিড মহামারীর কারণে এই সূচি পাল্টে যায়।
ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি পরীক্ষা না নিয়েই শিক্ষার্থীদের সনদ দেওয়া হয়। এরপর ২০২১ ও ২০২২ সালে পরীক্ষা নেওয়া হয় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে।
একনজরে
• চলতি বছর ১১ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন মোট ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন।
• ছাত্র ৭ লাখ ৫০ হাজার ২৮১ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৫০৯ জন। পরীক্ষা নেওয়া হবে মোট ২ হাজার ৭২৫টি কেন্দ্রে।
• ২০২৩ সালে ২ হাজার ৬৫৮টি কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন। সেই হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৯১ হাজার ৪৪৮ জন, কেন্দ্র বেড়েছে ৬৭টি।
• নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এবার মোট পরীক্ষার্থী ১১ লাখ ২৮ হাজার ২৮১ জন। যাদের মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৬৮০ জন এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৬০১ জন।
• এবার মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে ৮৮ হাজার ৭৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
• বিদেশের আটটি কেন্দ্রে এবার পরীক্ষার্থী ২৮১ জন।
এইচএসসি: সিলেট বিভাগের পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত