কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ৩০ বছর বয়সী ওই নারী গত শুক্রবার থেকে রাজধানীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
Published : 16 Jan 2025, 12:19 PM
শরীরে হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (এইচএমপি) শনাক্ত প্রথম রোগী রাজধানীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নিশ্চিত করেছেন।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ৩০ বছর বয়সী ওই নারী গত শুক্রবার থেকে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে নিবিঢ় পরিচর্যা কেন্দ্র-আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ওই চিকিৎসক বলেন, "এইচএমপি ভাইরাস ছাড়াও তার আরও কিছু শারীরিক জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এ অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি।"
গত রোববার আইইডিসিআরের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান ডা. আহমেদ নওশের আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এইচএমপিভি আক্রান্ত একজন রোগী শনাক্ত করেছি। তিনি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত আমরা পরে জানাব।”
এবারের শীতে চীনের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে শিশুরা এ ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সতর্কতা জারি করেছে চীন।
চীনের পর ভারতের কর্ণাটক রাজ্যেও আট মাসের এক শিশুর এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। এ পর্যন্ত বেশকিছু রোগী পাওয়া যায় ভারতে। আর বাংলাদেশে রোগী শনাক্তের খবর আসে গত ১২ ডিসেম্বর।
আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা, শীতকালীন রোগ থেকে রক্ষায় মাস্ক ব্যবহারসহ সাতটি পরামর্শ মেনে চললে দেশে নতুন করে দেখা দেওয়া হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস বা এইচএমপি ভাইরাস ঠেকানো যাবে।
এইচএমপি ভাইরাসে সাধারণত শ্বাসতন্ত্র আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির ঠাণ্ডা, সর্দিকাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, র্যাশ ওঠার মত লক্ষণ দেখা যায়। উপসর্গ মৃদু।
তবে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ার মত মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, আইইডিসিআরের উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশেও এই ভাইরাসটি ছিল, আছে। ফলে এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। আক্রান্ত হলে লক্ষণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মত।
“এই রোগ বাংলাদেশে ছিল। পৃথিবীর সব দেশেই আছে, এটা নতুন না। সতর্ক থাকা উচিত, কিন্তু শুধু শুধু আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নাই। চীনের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অনেক রোগী আসছে, তাই তারা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এটা তাদের দেশের নিয়ম।”
এইচএমপি ভাইরাস ‘প্রাণঘাতী রোগ নয়’ জানিয়ে ডা. মুশতাক বলেন, যারা নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত, তাদের জন্য এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।
“কারও যদি আগে থেকে কোমর্বিডিটি থাকে, তাহলে যে কোনো রোগই তার জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে। এই ভাইরাসে বাচ্চা ও বয়স্করা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। ইনফ্লুয়েঞ্জার যেমন ঝুঁকি, এই রোগেরও তেমন ঝুঁকি।”
ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, জ্বর ও সর্দিকাশি আছে এমন ব্যক্তি থেকে দূরে থাকা, জটিল রোগী হলে সরাসরি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন এই বিশেষজ্ঞ।