১৭ দিন ধরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসা এই শিক্ষকরা মঙ্গলবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
Published : 12 Mar 2025, 09:51 AM
স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ও সচল সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া 'আশ্বাসে' লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছেন ননএমপিও শিক্ষকরা।
১৭ দিন ধরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসা এই শিক্ষকরা মঙ্গলবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
‘দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়া’ এই ননএমপিও শিক্ষকরা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
বিদ্যমান এমপিও নীতিমালার শর্ত শিথিল করে ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করার দাবিতে ‘ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এ কর্মসূচি চালাচ্ছিলেন তারা।
দাবি দাওয়া নিয়ে মঙ্গলবার শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘আশ্বাস দেওয়ায়’ আন্দোলন স্থগিত করার কথা জানানো হয় শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলনে।
সম্মিলিত ননএমপিও শিক্ষক ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক সেলিম মিয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সচল সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও প্রদানের সিদ্ধান্ত সরকার নীতিগতভাবে মেনে নিয়েছেন। মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিব আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেছেন।
“মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিব মহোদয় ধারণা করছেন আগামীকাল বুধবার থেকে এমপিওভুক্তির প্রাথমিক কাজ শুরু হবে এবং চলতি বছরের মে মাসের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্তভাবে এমপিও তালিকা প্রকাশ করা হবে।"
এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলনরত এই শিক্ষকরা মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রার চেষ্টা করেন। তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ননএমপিও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নেন।
সেলিম মিয়া বলেব, "গত ১০ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার, শিক্ষা উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। এরপর থেকে ১৭তম দিনের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে অসুস্থ হয়ে দুইজন শিক্ষক মৃত্যবরণ করেছেন।
“অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের লাঠিচার্জে অনেক শিক্ষক আহত হয়েছেন। দীর্ঘ ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। আমরা আজ (মঙ্গলবার) প্রধান উপদেষ্টার অফিসে আমরা পদযাত্রা করি। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়।”
তিনি বলেন, “শিক্ষা উপদেষ্টা, মন্ত্রণালয়ে সচিব এবং একজন যুগ্ম-সচিব আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। শিক্ষা উপদেষ্টা আমাদের সব কথা লিপিবদ্ধ করেন এবং আমাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন।”
দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে 'বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনের প্রাণ হারানো' নয়জন ননএমপিও শিক্ষকের পরিবারকে 'ক্ষতিপূরণ' দেওয়ারও দাবি জানান প্রধান সমন্বয়ক।