তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ। এখন সাফাই সাক্ষ্য শেষে বাকি কেবল আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক।
Published : 20 Jul 2023, 06:40 PM
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় গ্লোবাল ইসলামী (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য শেষে আগামী ২৬ জুলাই আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের তারিখ রাখা হয়েছে।
ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ নজরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের সাক্ষ্য নিয়ে আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের তারিখ রাখেন।
সালাহউদ্দিন মোট ৭ কর্মদিবস সাক্ষ্য দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগামী তারিখে আসামিদের কাছে জানতে চাওয়া হবে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীরা যা যা বলছেন সেসব বিষয়ে তাদের বক্তব্য কী, তারা দোষী না নির্দোষ, তারা সাফাই সাক্ষ্য দেবেন কি না।
“দোষী বললে বিচারক আইনের কার্যপদ্ধতি অনুযায়ী যুক্তিতর্ক শুনানি না নিয়েই তৎক্ষণৎ সাজা দিতে পারেন। আর নির্দোষ বললে আত্মপক্ষ সমর্থন শেষে যুক্তিতর্কের তারিখ রাখবেন।”
তদন্ত কর্মকর্তার জেরার শেষ দিন তাকে প্রশ্ন রাখেন আসামি সুকুমার মৃধা ও তার কন্যা অনিন্দতা মৃধার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। বাকি আসামিদের জেরা এর আগেই শেষ হয়েছে।
এদিন কারাগারে থাকা চার আসামি অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধাকে আদালতে হাজির করা হয়।
বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচারের মামলার আসামি পিকে হালদার বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবাংলায় কারাগারে আটক আছেন। সেখানেও তার বিচার চলছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর সময় তিনি দেশে ফিরে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়ে আদালতে কাগজ জমা দিয়েছিলেন তার আইনজীবীরা। দেশে ফিরলে তাকে যেন গ্রেপ্তার করা না হয়, এমন আবেদন ফিরিয়ে বিমানবন্দর থেকে ধরে তাকে আদালতে নিয়ে আসার আদেশ আসে হাই কোর্ট থেকে।
এরপর পিকে আর দেশে ফেরেননি। তিনি কানাডায় আছেন, এমন একটি প্রচারের মধ্যে গত বছরের মে মাসে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তাকে গ্রেপ্তারের খবর আসে।
পিকে হালদারের কারণে দেশের বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার দশায় পড়েছে। শত শত কোটি টাকা তুলে নেওয়ার কারণে আমানতকারীদের টাকা ফিরিয়ে দিতে পারছে না সেগুলো।
যে মামলায় তার বিচার চলছে, তাতে তার মা লীলাবতী হালদার ছাড়াও আসামি আছেন পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তমকুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রিতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি; তারাও পলাতক।
এই মামলায় মার্চে অথবা এপ্রিলে এ মামলার বিচার শেষ হবে বলে জানুয়ারির শেষে আশা প্রকাশ করেছিলেন আইনজীবী মীর আহাম্মদ আলী সালাম।
কিন্তু নানা কারণে কাঙ্ক্ষিত সময়ে রায় আসেনি। তদন্ত কর্মকর্তা আরো সাক্ষ্য দেবেন জানানোর কারণে আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তিতর্কের জন্য দিন রাখা যায়নি।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি মামলাটি করেন দুদকের উপপরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী।
এজাহারে বলা হয়, পি কে হালদার অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ নিজ দখলে রেখেছেন। ওই অর্থ বিদেশে পাচার করে মানি লন্ডারিং আইনেও অপরাধ করেন।
তদন্ত শেষে ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন।