এ ঘটনায় ‘দেশের ভাবমূর্তি নষ্টকারীদের’ বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন প্রতিমন্ত্রী।
Published : 11 Jun 2024, 04:59 PM
প্রায় তিন হাজার বাংলাদেশি কর্মীর মালয়েশিয়ায় যেতে না পারার ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় আরো ৫ কার্যদিবস বাড়ানো হয়েছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, “মালয়েশিয়া কর্মী পাঠানোয় বির্পযয়ের ঘটনায় তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার শেষ দিনেও ছিল আজ। কিন্তু রিপোর্ট দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি। তাই রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময় আরও ৫ কার্যদিবস বাড়ানো হয়েছে।”
এ ঘটনায় ‘দেশের ভাবমূর্তি নষ্টকারীদের’ বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন প্রতিমন্ত্রী।
গত ২ জুন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হককে প্রধান করে ছয় সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।
তদন্ত কমিটি কী করবে, তার ব্যাখ্যায় সেসময় প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, “কর্মানুমতি ও বিএমইটির ক্লিয়ারেন্স কার্ড পাওয়ার পরও মালয়েশিয়াতে কর্মী পাঠাতে না পারার কারণ চিহ্নিত করা, নির্ধারিত সময়ে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে ব্যর্থ রিক্রুটিং এজেন্সি চিহ্নিত করা, মালয়েশিয়া যেতে পারেননি এমন কেউ অভিযোগ করলে তা আমলে নিয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণ করবে কমিটি।”
যেসব কর্মী নির্ধারিত সময়ে মালয়েশিয়া যেতে পারেননি, তাদের কাছে তথ্যও চেয়েছিল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি। যেতে না পারা কর্মীদের অভিযোগ জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গত ৮ জুন।
মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী গত ৩১ মে পর্যন্ত দেশটিতে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৬ জন বাংলাদেশি কর্মীকে পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু, বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) ছাড়পত্র দেয় প্রায় ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬৪২ জনকে।
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য জনপ্রতি ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা করে খরচ নির্ধারণ করে দেয় সরকার। পাসপোর্ট খরচ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, নিবন্ধন ফি, কল্যাণ ফি, বিমা, স্মার্ট কার্ড ফি ও সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ এর মধ্যেই থাকার কথা।
আর কর্মীদের ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার উড়োজাহাজ ভাড়াসহ ১৫টি খাতের খরচ বহন করার কথা ছিল নিয়োগকারী কোম্পানির।
কিন্তু কর্মীপ্রতি গড়ে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই রুটে উড়োজাহাজ ভাড়াও ৩০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ১ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
এরপরও কোটার অন্তত ৩২ হাজার ৩৪জন কর্মী দেশটিতে যেতে পারেননি। তাদের কেউ-কেউ উড়োজাহাজের টিকিট পাননি। আবার কেউ এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়ে যেতে পারেননি।
এদিকে মালয়েশিয়ায় কর্মী নেওয়ায় সিন্ডিকেটের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ অ্যসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) একাংশে অন্য অংশকে দায়ী করেছে। এ নিয়ে সোমবার সকালে সংগঠনের ৩৩তম বার্ষিক সাধারণ সভায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়৷ সেখানে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
পরে বিকালে এ নিয়ে হামলা ও নাজেহাল করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনে করে বায়রার জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রিয়াজ-উল-ইসলামের নেতৃত্বে সংগঠনটির সদস্যদের একাংশ।