“কমিটির যে প্রতিবেদন তা নিয়ে সংসদীয় কমিটি সন্তুষ্ট নয়। কারণ কমিটি মনে করে, তদন্ত কমিটির সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন আছে ।”
Published : 02 Jul 2024, 09:47 PM
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে ‘দ্রুত বিষয়টি নিষ্পত্তির’ সুপারিশ করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এই সুপারিশ করা হয়। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কমিটির একজন সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বৈঠকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো নিয়ে আলোচনা হয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি গত ২৪ জুন তাদের প্রতিবেদন দিয়েছে। তবে সেটা পূর্ণাঙ্গ নয়। এটি আরও পর্যালোচনা করা হবে। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
“কমিটির যে প্রতিবেদন তা নিয়ে সংসদীয় কমিটি সন্তুষ্ট নয়। কারণ কমিটি মনে করে, তদন্ত কমিটির সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন আছে। যাদের কারণে মালয়েশিয়ার শ্রম বাজার নিয়ে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাদের শক্তভাবে ধরতে চায় সংসদীয় কমিটি।”
মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী গত ৩১ মে পর্যন্ত দেশটিতে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৬ জন বাংলাদেশি কর্মীকে পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু, বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) ছাড়পত্র দেয় প্রায় ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬৪২ জনকে।
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য জনপ্রতি ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা করে খরচ নির্ধারণ করে দেয় সরকার। পাসপোর্ট খরচ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, নিবন্ধন ফি, কল্যাণ ফি, বিমা, স্মার্ট কার্ড ফি ও সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ এর মধ্যেই থাকার কথা।
আর কর্মীদের ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার উড়োজাহাজ ভাড়াসহ ১৫টি খাতের খরচ বহন করার কথা ছিল নিয়োগকারী কোম্পানির।
কিন্তু কর্মীপ্রতি গড়ে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই রুটে উড়োজাহাজ ভাড়াও ৩০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ১ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
এরপরও কোটার কয়েক হাজার কর্মী দেশটিতে যেতে পারেননি। তাদের কেউ-কেউ উড়োজাহাজের টিকিট পাননি। আবার কেউ এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়ে যেতে পারেননি।
মঙ্গলবার সংসদীয় কমিটির সভায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, যারা মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি, তাদের তিন থেকে চার হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। আসলে কতজন যেতে পারেননি, তা সুনির্দিষ্টভাবে বের করতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।
বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, তারা মন্ত্রণালয়ের কাছে কাগজপত্র চেয়েছেন যাতে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় কতজন যেতে পারেননি। তাদের জন্য কী করা যায় তা নিয়ে কমিটি আরো আলোচনা করবে।
বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের সাম্প্রতিক সমস্যা ও সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদন পেশ, মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে অবস্থানরত বাংলাদেশের কর্মীদের সামগ্রিক নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশ বিষয়ে প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ৫০টি উপজেলায় ৫০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন পেশ ও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, মুহিবুর রহমান মানিক, আব্দুল মোতালেব, মহিউদ্দিন আহমেদ, নিজাম উদ্দিন হাজারী, মো. মাজহারুল ইসলাম, মো. আবুল কালাম আজাদ, মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা এবং শাম্মী আহমেদ বৈঠকে অংশ নেন।