সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে ১৬ জেলার ১১ হাজার বাস আসা-যাওয়া করে। এ টার্মিনাল কাচপুরে গেলে ঢাকার যানজট ৩০% কমে যাবে বলে কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা।
Published : 09 Aug 2023, 07:03 PM
গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং রাজধানীবাসীকে যানজট থেকে মুক্তি দিতে কাচপুরে শুরু হল ঢাকা নগর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের নির্মাণ কাজ।
প্রাথমিকভাবে ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ বিঘা জমির ওপর এই বাস টার্মিনাল নির্মিত হবে। সায়েদাবাদ থেকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল সরিয়ে নেওয়া হবে কাচপুরে।
বুধবার এ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “ঢাকা শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করার লক্ষ্যে বাস রুট র্যাশনালাইজেশন কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে আমরা আজ কাচপুরে ঢাকা নগর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেছি।”
মেয়র জানান, ১৯৮৪ সালের পরে ঢাকায় আর কোনো আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল হয়নি। সে কারণে নতুন এ টার্মিনালের প্রতীক্ষা দীর্ঘদিনের।
"সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের এখানে সাড়ে ১২ একরের বেশি জমি চিহ্নিত দেওয়া হয়েছে। এখানে টার্মিনাল নির্মাণ সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের ১৬ জেলার বাস সেবা এখান থেকেই পরিচালনা করা হবে।"
টার্মিনাল নির্মাণের প্রাথমিক কার্যক্রম সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নেই হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, "এই টার্মিনাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করছে এবং এটা পরিচালনার পূর্ণ দায়িত্বও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পালন করবে।
"নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর বাসগুলো এখান থেকেই সেবা দেওয়া শুরু করবে। আমাদের বাস রুট র্যাশনালাইজেশন কমিটির যে পরিকল্পনা, তার আওতায় গণপরিবহন ব্যবস্থাপনাকে আমরা একটি সুষ্ঠু ও শৃঙ্খলার আওতায় নিয়ে আসব। ধাপে ধাপে আমরা সে লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি।"
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি নাগাদ কাচপুর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন মেয়র।
তিনি বলেন, "প্রাথমিক পর্যায়ে এখানে মাটি ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, বাস ঢোকা ও বের হওয়া এবং শ্রমিকদের থাকার ছাউনির ব্যবস্থা করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ের এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে ২৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
"আমরা আশাবাদী, আগামী ছয় মাসের মধ্যেই প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ এখানে শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি নাগাদ ঢাকা নগর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের কার্যক্রম আমরা শুরু করতে পারব। সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা আজকে এই কাজ শুরু করছি।"
কাচপুরের টার্মিনালসহ অন্যান্য টার্মিনালগুলোর কাজ হলে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালটি শুধু শহরের ভেতরে চলাচল করা নগর পরিবহনের বাসের টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহৃত হবে বলে জানান তাপস।
এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পাশাপাশি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সড়ক সচিবকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, "ঢাকা শহর থেকে পর্যায়ক্রমে টার্মিনালগুলো সরাতে হবে। এটি সে কার্যক্রমেরই প্রথম উদ্যোগ। এই শহরটা, এই দেশটা আমাদের সবার। এখানে টার্মিনাল নির্মাণ হলে, মেয়র সাহেব যে জেলাগুলোর কথা বললেন, সেসব জেলার গাড়িগুলো এখান থেকেই পরিচালিত হবে। এ ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেব।"
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন সাংবাদিকদের বলেন, সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে ১৬ জেলার ১১ হাজার বাস আসা-যাওয়া করে।
“এই বাসগুলো যদি ঢাকা মেট্রোপলিটন সিটির ভিতরে না ঢোকে, তাহলে আমাদের ৩০ শতাংশ যানজট কমে যাবে। এটা আমাদের জন্য এক বিরাট মাইলফলক হবে।"