দায়িত্ব গ্রহণের আগে সমর্থক আইনজীবীদের নিয়ে মতবিনিময় করেন বিএনপি নেতা।
Published : 04 Apr 2024, 08:54 PM
নানা সন্দেহ, অবিশ্বাস ও জল্পনা-কল্পনার মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে নির্বাচিত এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
বৃহস্পতিবার বিকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় নবনির্বাচিত অন্যদের সঙ্গে তিনিও দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এর আগে দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে (১ নম্বর হল রুম) বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খোকন ও তার সমর্থকদের এক মতবিনিময় সভা হয়, যেখানে তার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পক্ষে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন।
গত ৬ ও ৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে ভোট হয়। ৯ মার্চ গভীর রাতে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক আবুল খায়ের।
নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল (নীল) থেকে সভাপতি পদে খোকন এবং সদস্য পদে সৈয়দ ফজলে এলাহী, ফাতিমা আক্তার ও মো. শফিকুল ইসলাম শফিক বিজয়ী হন।
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ (সাদা প্যানেল) থেকে বিজয়ী হন সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক, সহ-সভাপতি রমজান আলী শিকদার ও দেওয়ান মো. আবু ওবাঈদ হোসেন সেতু, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী, সহ-সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির ও মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।
একই প্যানেল থেকে সদস্য পদে জয় পান মো. বেলাল হোসেন শাহীন, খালেদ মোশাররফ রিপন, মো. রায়হান রনি ও রাশেদুল হক খোকন।
নানা ঘটনার মধ্যে শেষ হওয়া নির্বাচন না মেনে বিএনপি সমর্থিতরা ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করেন। এক পর্যায়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম নীল প্যানেল থেকে নির্বাচিতদের চিঠি দিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করতে নিষেধও করেছিল।
গত ২৭ মার্চ দেওয়া জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী ও মহাসচিব কায়সার কামাল স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, “যে নির্বাচনে আমাদের পুরো প্যানেলেরই বিজয় সুনিশ্চিত ছিল, সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাদের (বিএনপির বিজয়ী চারজন) নামকাওয়াস্তে বিজয়ী দেখানো হয়েছে।”
নিষেধকারীদের সমালোচনা
দায়িত্ব গ্রহণের আগে দুপুরে আইনজীবী সমিতির এক নম্বর হলরুমে খোকন তার সমমনা আইনজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
সেখানে তিনি জানতে চান দায়িত্ব নেবেন কি না। বেশিরভাগ আইনজীবী দায়িত্ব নেওয়ার পক্ষে সমর্থন দেন।
সভায় খোকনসহ অন্য বক্তারা দায়িত্ব গ্রহণে নিষেধকারীদের সমালোচনাও করেন। তারা দলের মধ্যে একটি পক্ষকে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য অভিযুক্ত করেন।
সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিনের সভাপতিত্বে মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন মহসিন রশিদ, শাহ আহমেদ বাদল, সাবেক সহ-সভাপতি ওয়ালি উর রহমান খান, সাবেক সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম মেহেদী, গোলাম মোস্তফা ও এবিএম রফিকুল হক তালুকদার রাজা।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাচনের ভোট গণনা নিয়ে হাতাহাতি, হইচই ও মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় গত ৮ মার্চ রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন এক আইনজীবী।
স্বতন্ত্র সম্পাদক পদপ্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথি ও নীল প্যানেলের সম্পাদক পদপ্রার্থী রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এতে। আসামি করা হয় ৩০ থেকে ৪০ জনকে।
ওই মামলায় রুহুল কুদ্দুস কাজল কয়েকদিন হাজতেও ছিলেন।