বাংলাদেশে আরও বেশি উপস্থিতি চাই: আইরিশ মন্ত্রী

ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাইমন কভনি। এদিন তিনি ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনস্যুলেট জেনারেলও উদ্বোধন করেছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2024, 04:08 PM
Updated : 18 March 2024, 04:08 PM

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক বাড়াতে কাজ করার কথা বলেছেন আয়ারল্যান্ডের এন্টারপ্রাইজ, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী সাইমন কভনি।

সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ইতোমধ্যে এখানে আমাদের আইরিশ জনগণের উপস্থিতি রয়েছে।

“কিন্তু আমরা চাই এই উপস্থিতি আরও বড় পরিসরে হোক। আমরা চাই সামনের বছরগুলোতে সম্পর্ক বৃদ্ধি পাক এবং সে কারণে আমরা এখানে।”

এক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহযোগিতা করে যাওয়া এবং দীর্ঘদিন ধরে আইরিশ বেসরকারি সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের কার্যক্রম চলার কথা তুলে ধরেন তিনি।

বাংলাদেশে আসা আয়ারল্যান্ডের প্রথম কোনো মন্ত্রী সাইমন কভনি। রোববার ঢাকায় আসেন তিনি। কভনি এর আগে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বেও ছিলেন।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পাশাপাশি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজিত একটি আলোচনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেন আইরিশ মন্ত্রী।

ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাইমন কভনি।


এদিন তিনি ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনস্যুলেট জেনারেলও উদ্বোধন করেছেন।

বিকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।

অনারারি কনস্যুলেট জেনারেল খোলার মাধ্যমে ঢাকায় কূটনৈতিক ‘পদচিহ্ন’ প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরে সাইমন কভনি বলেন, “বাণিজ্যমন্ত্রী এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমি আশা করি, আমরা নিবিড় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠাও করতে পারব।

“যাতে এখানে আইরিশ কোম্পানিগুলো এখানকার প্রবৃদ্ধির গল্পের অংশ হতে পারে এবং বাংলাদেশও আয়ারল্যান্ডকে ইউরোপের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে পারে, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের একমাত্র ইংরেজিভাষী দেশ। ইংরেজি ভাষায় কূটনীতি ও ব্যবসা হতে পারে।”

সম্পর্কন্নোয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশে আবারও ফিরে আসার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আয়ারল্যান্ডের সাফল্যকে ভাগাভাগি করে নিতে আমরা আপনাদের সঙ্গে সরকার এবং ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই, যাতে আমরাও এখানকার খুব গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গল্পের অংশ হতে পারি।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় নিজের সর্বশেষ ‘রাজনৈতিক বৈঠকে’ এই অঞ্চলের ‘জটিল’ পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরেন সাইমন কভনি।

তিনি বলেন, “আমরা এই অঞ্চলের রাজনৈতিক জটিলতা নিয়েও আলোচনা করেছি। সেসব বিষয়ের মধ্যে চীন, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক এবং বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের চাপের বিষয় ছিল, যেখানে আয়ারল্যান্ড সহযোগিতা করতে চায়।”

আইরিশ মন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ঢাকায় অনারারি কনসুলেট উদ্বোধনের জন্য আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

“এবং আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদন ঢাকায় অনারারি কনসুলেটে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করে সহজীকরণের অনুরোধ জানান।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পরও ইউরোপীয় ইউনিয়নের এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) এবং 'জিএসপি প্লাস' সুবিধা অব্যাহত রাখতে আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।