বাবুর জামিন আবেদন নাকচ করে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ঝিনাইদহের কারাগারে পাঠানোর আদেশও দিয়েছেন বিচারক।
Published : 24 Jun 2024, 05:14 PM
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবুকে ফের রিমান্ডে নিতে পুলিশের করা আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
একই সঙ্গে নাকচ হয়েছে তার জামিন আবেদন। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে ঝিনাইদহের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।
সোমবারে ঢাকার মহানগর হাকিম আতাউল্লাহ এসব আদেশ দেন।
মোবাইল ফোনসহ যেসব আলামত গোপন করতে পুকুরে ফেলে দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে সেগুলো ১০ কর্মদিবসের মধ্যে একজন বিভাগীয় হাকিমের নেতৃত্বে উদ্ধার অভিযানে নামতে পুলিশকে নির্দেশও দেওয়া হয়।
সোমবার বাবুকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে তদন্তের স্বার্থে আরও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু।
আবেদন নাকচের পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই আইনজীবী বলেন, “আদেশে আমরা সন্তুষ্ট নই। পূর্ণাঙ্গ আদেশ দেখে সিদ্ধান্ত নেব এর বিরুদ্ধে দায়রা জজ আদালতে রিভিশন করব কি না।”
গত ৬ জুন রাতে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বাবুকে তার স্টেডিয়াম পাড়ার বাসা থেকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।
তিন দিন পর আনার অপহরণের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠান।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হলে গত ১৪ জুন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠান।
এই মামলায় এর আগে শিমুল ভুঁইয়া ওরফে শিহাব ওরফে আমানুল্যাহ সাঈদ, তানভীর ভূঁইয়া ও সেলেস্টি রহমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকেও।
গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আনারকে খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলাটি করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
এতে বলা হয়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের বাসা থেকে গত ৯ মে রাত ৮টার দিকে তার বাবা গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন। দুদিন পর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বললে আনারের কথাবার্তা কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়।
এরপর বাবার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পান ডরিন।
গত ১৩ মে আনারের ভারতীয় নম্বর থেকে ডরিনের উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে, যাতে লেখা ছিল ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত সাহার কাজে নিউটাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। আমি পরে ফোন দেব।’
এরপর আরও কয়েকটি মেসেজ আসে, যেগুলো তার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে বলে ডরিন উল্লেখ করেন।
কলকাতায় আনার উঠেছিলেন তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে। খোঁজ না পেয়ে তিনিও ভারতীয় বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন।
পরে আনারকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণের কথা জানতে পারার কথা বলা হয় মামলায়।
এই মামলা করার পর কলকাতা পুলিশ জানায়, আনারকে সেখানকার একটি ফ্ল্যাটে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে সরিয়ে ফেলার রোমহর্ষক বর্ণনাও দেয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পুলিশ।
এই হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল থেকে কয়েকজনকে আটক করা হয়।