“এমনকি অনেক বয়স্ক, রিটায়ার্ড পারসনরাও এর মধ্যে আসছেন,” বলেন প্রতিমন্ত্রী।
Published : 25 Jun 2024, 01:01 AM
দেশের ৫০ লাখ মানুষ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে জানিয়ে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
সোমবার সচিবালয়ে ঢাকায় ফরাসি রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুঁই এর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
এক প্রশ্নের উত্তরে পলক বলেন, “অনলাইন জুয়ায় মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আমাদের বিভিন্ন বয়সের ছেলেমেয়েরা যুক্ত হয়ে পড়ছে। এমনকি অনেক বয়স্ক, রিটায়ার্ড পারসনরাও এর মধ্যে আসছেন। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি, ৫০ লাখ মানুষ কীভাবে যেন এই অবৈধ জুয়ার সাইটগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে।”
মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসে যে অনলাইন জুয়া খেলা হয়, সেটার বিরুদ্ধে ‘সামগ্রিক অভিযান’ পরিচালনা করা হবে বলে জানান পলক।
তিনি বলেন, “আমরা অবৈধ জুয়ার সাইটগুলোকে ব্লক (বন্ধ) করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টা করছি, যাতে সাধারণ মানুষ এ ধরনের কোনো প্রলোভনে পড়ে প্রতারিত না হয়, আমাদের দেশের মুদ্রা যাতে বিদেশে পাচার না হয়। সচেতনতা আর একটা প্রযুক্তিগত প্রয়োগ, পাশাপাশি কঠোর আইনের প্রয়োগ।”
কতগুলো জুয়ার সাইট বন্ধ করা হয়েছে জানতে চাইলে পলক বলেন, “কিছুদিন আগে টিআরএনবি নামের একটি সংগঠনের সঙ্গে আলাপকালে আমরা বিবষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছি। আমরা মোট দুই হাজার ৬০০টি জুয়ার সাইট ব্লক করেছি। এখন আমরা মোবাইল অ্যাপগুলো প্রতিনিয়ত ব্লক করছি। এটা কন্টিনিউয়াস প্রসেস, চলতে থাকবে।”
বন্ধ হওয়া সাইটগুলো আবার খুলে যাওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “এটা নিয়ে আমরা ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকম, ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেন্টার, কম্পিউটার কাউন্সিল, বিটিআরসি এবং সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি- সবাইকে নিয়ে বসেছিলাম। যার যতটুকু সক্ষমতা আছে, পুলিশ এবং ইন্টেলিজেন্স, সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে একটা ড্রাইভ দিচ্ছি। আরও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রযুক্তি প্রয়োগ করে আমরা কন্টিনিউয়াসলি এটা আমরা ব্লক করতে থাকবো। মিডিয়াসহ বিভিন্ন সোর্সে আমরা যেটা পাচ্ছি, সেটা ব্লক করার চেষ্টা করছি।”
ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গত ১০ বছরে টেকনলজি, ইনোভেশন, বিজনেস, ট্রেড এবং কালচারের ক্ষেত্রে যে ম্যাসিভ ট্রান্সফরমেশন হয়েছে এটা একটা খুবই আশ্চর্যজনক বিষয়। সম্প্রতি আমি ফ্রান্সে ভ্রমণ করে এসব দেখে খুবই ইমপ্রেসড হয়েছি। সেখানে সাইবার সিকিউরিটির ক্ষেত্রে সরকার ও প্রাইভেট সেক্টর এক সাথে কাজ করছে। ফ্রান্সের সাথে বাংলাদেশের সাইবার সিকিউরিটির কলাবরেশন হতে পারে। এটা নিয়ে কথা হয়েছে।
“পাশাপাশি নেটওয়ার্ক ৪২, স্টেশন অ্যাপ, ফরেন ট্রেড মিনিস্টার, লা গোবলা এবং এয়ারবাস কোম্পানির কার্যালয় ভিজিট করেছি। সেখানে অপটিক্যাল স্যাটেলাইট, রেডার স্যাটেলাইট, ডিফেন্স স্যাটেলাইট কারখানা ভিজিট করি। সেই বিষয়গুলোকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয়ে কখন কীভাবে কোলাবরেশন হবে, কীভাবে আগাব এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “টেকনলজি, ইনোভেশন, নলেজ ট্রান্সফার, নলেজ এক্সচেইঞ্জ, অরিয়েন্টেশন সব ধরনের সহায়তা বিনিময় ফ্রান্সের সঙ্গে হবে। আমরা আশা করছি এ বিষয়গুলোকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সত্যিকার অর্থে ফ্রান্স বাংলাদেশের বন্ধুত্বটা অনেকটা কাজে দেবে বলে আমি আশা করছি। আমরা পুরো সিস্টেমটা বাংলাদেশে নিয়ে আসতে চাচ্ছি। তারা এখানে এসে ট্রেনিং দেবে।”