“আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো বিদেশ যাচ্ছেন না। তিনি তার চোখ তো বাংলাদেশেই পরীক্ষা করিয়েছেন”, বলেন তিনি।
Published : 09 Jul 2024, 08:52 PM
স্বাস্থ্য খাতে সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে সব মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদেরও দেশের হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।
মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো বিদেশ যাচ্ছেন না। তিনি তার চোখ তো বাংলাদেশেই পরীক্ষা করিয়েছেন। এভাবে যদি আমাদের সমস্ত সংসদ সদস্য এবং সমন্ত মন্ত্রী মহোদয়রা যদি আমাদের দেশের হাসপাতালগুলোতে যদি চিকিৎসা নেন, তাহলে সাধারণ মানুষের আত্মবিশ্বাসটা ফিরে আসবে।”
দেশে চিকিৎসায় অবহেলা ও এই অভিযোগে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়েও কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। জানান, দুটি বিষয় মাথায় রেখে একটি আইন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নাম রাখা হচ্ছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন।
আইনটি জরুরি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরেই এটা নিয়ে কাজ করে আসছি। এর মধ্যে রোগীদেরও সুরক্ষা দেব, চিকিৎসকদেরও সুরক্ষা দেব।
“শুধু যে চিকিৎসককে সুরক্ষা দেব তা না, একটা মানুষ যেন সুন্দর সেবা পায়, তার চিকিৎসায় যেন অবহেলা করা না হয়, সে জন্য আইনটা করা হচ্ছে। এটা এখনও পর্যালোচনার পর্যায়ে আছে। …আমি এটা নিয়ে কয়েকটা মিটিংও করেছি। আমি চেষ্টা করব এটাকে যত দ্রুত সম্ভব পার্লামেন্টে নেওয়া যায়।”
স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন হলে রোগীদের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা কমবে কি না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “আমি তো জোর করে কাউকে বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে পারব না। কেউ যদি তার বাবা বা স্ত্রীকে নিজের পয়সায় বিদেশে পাঠায়, তাহলে সেখানে তো আমার করার কিছুই নেই।
“আমার দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে নিয়ে আসা। আমাদের দেশের হাসপাতালে যেন চিকিৎসা করানোর মত ভরসা পায়। বিদেশ থেকেও তো রোগী আসছে আমার হাসপাতালে, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে তো বিদেশ থেকেও রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে।”
ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুতি
ডেঙ্গু মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতি নিয়েও কথা বলেন সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, “ আমাদের সব চিকিৎসক ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়ে জানেন। ডেঙ্গু চিকিৎসা নিয়ে আমাদের একটা গাইডলাইন আছে। সব চিকিৎসকই ডেঙ্গু চিকিৎসা ও গাইডলাইন সম্পর্কে জানেন৷
“ওপরওয়ালা মাফ করুক, আমরা কেউ চাই না, ডেঙ্গুতে একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হোক। যদি সে রকম হয়, আমরা আশা করি উপরওয়ালার ইচ্ছায়, আমরা সামলাতে পারব বলে আশা করি।'
হাসপাতালে স্যালাইন সরবরাহের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “আমাদের পর্যাপ্ত স্যালাইন রয়েছে৷ অ্যাসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডসহ বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করেছি৷ আমার পূর্ণ নির্দেশ দেওয়া আছে, যেন কোনোভাবেই স্যালাইনের ঘাটতি না হয়।”
গত বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠার পর স্যালাইনের ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছিল। নির্ধারিত দামের দ্বিগুণ- তিন গুণ দরেও স্যালাইন পাওয়া যায়নি।
মশা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং ঢাকার দুই মেয়রের সঙ্গেও কথা হয়েছে তাদের। তিনি বলেন, “দুটি মন্ত্রণালয়কে সমন্বয় করে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় উভয়ই যৌথ উদ্যোগ থাকা প্রয়োজন।”