ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের সময় রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের ঘোষণা চেয়েছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
Published : 03 Jun 2015, 11:41 PM
সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে করছে বাংলাদেশ সরকার। এতে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে বলে পরিবেশবিদদের আশঙ্কা।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রবিরোধী নাগরিক সংগঠন তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি মোদীর সফরের তিন দিন আগে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের দাবি তুলে ধরে।
কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, সুন্দরবনের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে এই ধরনের কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভারতে করা যায় না। অথচ বাংলাদেশে বনের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে তা করার পরিকল্পনা হচ্ছে।
“ভারতের ইআইএ গাইডলাইন ২০১০ অনুসারে বনাঞ্চলের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা যায় না। ভারতে পরিবেশ আইন অনুসারে এনটিপিসির একাধিক প্রকল্প বাতিল করতে হয়েছে।”
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে নির্মাণের প্রস্তুতিমূলক কাজ বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি।
আনু মুহাম্মদ বলেন, প্রস্তুতিমূলক কাজের ফলে সৃষ্ট পরিবেশ দূষণটুকুও নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি বলে খোদ সরকারি মনিটরিং রিপোর্টেই স্বীকার করা হয়েছে। বালি ভরাটের সময় ধুলো নিয়ন্ত্রণ, ড্রেজিংয়ের সময় শব্দ দূষণ ও কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মৎস্য সম্পদ রক্ষা ইত্যাদির জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ছিল, তার কোনোটিই পালন করা হয়নি বলে স্বীকার করা হয়েছে সরকারেরই নিয়োগ করা প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস।
“এই দূষণগুলোর জন্য হয়ত সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে না, কিন্তু এগুলো স্পষ্টতই দেখায় যে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে সুন্দরবনে কী ঘটবে। প্রস্তুতি পর্যাযেই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে, যখন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হবে, যখন তা পুরোদমে চালু হবে, যখন প্রতিদিন হাজার হাজার টন সালফার, নাইট্রোজেন গ্যাস, ছাই, কয়লা ধোয়া পানি নির্গত হবে তখন কী ঘটবে তা অনুমান করতে অসুবিধা হয় না।”
এই প্রকল্প বন্ধ করতে বাংলাদেশ-ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রীর কাছেই আহ্বান জানান আনু মুহাম্মদ। আগামী ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সব অনুষ্ঠানে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবি জানাতে দেশবাসীকে আহ্বান জানান তিনি।
পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, প্রকৌশলী মওদুদুর রহমান, গবেষক মাহা মির্জা প্রমুখ।