ভারতে ম্যাগি ইন্সট্যান্ট নুডলসে মাত্রাতিরিক্ত সীসা ও মনো-সোডিয়াম গ্লুটামেট (এমএসজি) নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই বাংলাদেশে খাবারের মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, দেশে পাঁচ কোম্পানির নুডলস পরীক্ষা করে ক্ষতিকারক কোনো উপাদান তারা পায়নি।
Published : 02 Jun 2015, 01:49 PM
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) এর ‘সার্টিফিকেশন মার্কস’ বিভাগের পরিচালক কমল প্রসাদ দাস মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ম্যাগিসহ পাঁচ কোম্পানির নুডলস আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি। কোনোটিতেই ক্ষতিকারক মাত্রায় কোনো উপাদান পাওয়া যায়নি।”
বহুজাতিক কোম্পানি নেসলের তৈরি ‘ম্যাগি’ ছাড়াও দেশের বাজারে থাকা নিউজিল্যান্ড ডেইরির ‘ডুডুলস’; কল্লোল থাই ফুডের ‘মামা’; ইফাদ মাল্টি প্রোডাক্টের ‘ইফাদ এগি’ ও প্রাণ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান নাটোর এগ্রো লিমিটেডের ‘মিস্টার’ নুডুলস পরীক্ষা করে দেখেছে বিএসটিআই কর্তৃপক্ষ।
বিএসটিআই নিয়মিত বাজারের বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের নমুনা পরীক্ষা করে জানিয়ে কমল প্রসাদ বলেন, “আরও কিছু পণ্যের নমুনা পরীক্ষা চলছে। কোথাও ক্ষতিকর উপাদান পেলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভারতের উত্তর প্রদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) পরীক্ষায় নেসলে ইন্ডিয়ার তৈরি নুডলসে উচ্চমাত্রার সীসা পাওয়ার পর গত ২০ মে পণ্যটি বাজার থেকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
এফডিএর কর্মকর্তারা বলেছেন, পরীক্ষা করা দুই ডজন প্যাকেটের সবগুলোতেই ১৭ দশমিক ২ পিপিএম সীসা পাওয়া গেছে, যা অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে সাতগুণ বেশি। ভারতে শূন্য দশমিক শূন্য ১ পিপিএম থেকে ২ দশমিক ৫ পিপিএম পর্যন্ত সীসার উপস্থিতি গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়।
এছাড়া ভারতের ম্যাগিতে স্বাদবর্ধক মনোসোডিয়াম গ্লুটামেটের (এমএসজি) মাত্রাও বেশি ছিল বলে কর্মকর্তারা জানান।
এরপর এফডিএর পক্ষ থেকে নেসলে ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ম্যাগি নুডলসের পণ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়ায় বলিউড তারকা মাধুরী দীক্ষিত, অমিতাভ বচ্চন ও প্রিটি জিনটার বিরুদ্ধে হয় আলাদা মামলা।
বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তারা জানান, তারা কোনো পণ্যের মান পরীক্ষার পর সাধারণত তিন বছরের জন্য সনদ দেন। ওই মেয়াদের মধ্যেও প্রতি ছয় মাস পরপর বাজার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে মান পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু নুডলস নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষাপটে বাজার থেকে পাঁচ কোম্পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়।
নেসলে বাংলাদেশের করপোরেট কমিউনিকেশন ম্যানেজার ফারাহ শারমীন আওলাদের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভারতে ম্যাগি তৈরি করে নেসলে ইন্ডিয়া। আর বাংলাদেশে নেসলে বাংলাদেশ ম্যাগি তৈরি ও বাজারজাত করে।
“বাংলাদেশের ম্যাগি নুডলস সম্পূর্ণভাবে দেশে উৎপাদিত। এর অধিকাংশ কাঁচামাল দেশের বাজার থেকেই নেওয়া। ভারতের ম্যাগি নুডলসের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।”
বিএসটিআই কর্মকর্তা কমল প্রসাদ বলেন,মাটিতে কোনো ক্ষতিকর উপাদান বেড়ে গেলে তা উৎপাদিত ফসল এবং সেই ফসল থেকে উৎপাদিত পণ্যে প্রবেশ করতে পারে।
“তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের মাটিতে এ ধরনের কোনো উপাদান অতিরিক্ত মাত্রায় পাওয়া যায়নি। সুতরাং কোনো পণ্যেও বিপজ্জনক মাত্রায় ক্ষতিকারক উপাদান থাকার কথা নয়।”