রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সুন্দরবন হোটেলের পাশে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের এক পাশের সড়কে ধসের পর পুরো এলাকা ঝুঁকিমুক্ত করতে ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ‘সহযোগিতা করছে না’ বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক।
Published : 29 May 2015, 03:43 PM
শুক্রবার ঘটনাস্থলে এসে কাজের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এই জমির মালিক হল ন্যাশনাল ব্যাংক। আমরা এক্সপেক্ট করি মালিকপক্ষ সরেজমিনে আসবে।...মালিকপক্ষের কেউ আমার সঙ্গে এক মিনিটের বেশি কথা বলেননি।”
সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ‘লক্ষ লক্ষ ফুট’ বালি আনা হলেও ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বা তাদের ভবন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান বালি ফেলার কাজে আশানুরূপ সহযোগিতা করছেন না বলে অভিযোগ করেন মেয়র।
এদিকে সকালে ন্যাশনাল ব্যাংক নির্মাণাধীন টুইন টাওয়ারের পাইলিং এলাকার উত্তর-পূর্ব অংশে আবারও একটি অংশ ধসে পড়ে। ওই অংশে আগের রাতেও এক দফা ধস নামে।
কলাবাগান থানার ওসি মোহাম্মদ ইকবাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুক্রবার সকালে আবারও ধস দেখা দেয়। তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।”
বুধবার সকালে বৃষ্টির মধ্যে বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক লাগোয়া হোটেল সুন্দরবন এবং ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের নির্মাণাধীন টুইন টাওয়ারের মাঝের ১৫ ফুট প্রশস্ত সড়কটি ধসে পাশের পাইলিংয়ের গর্তে চলে যায়।
মাটি আলগা হয়ে বেইজমেন্টের একটি অংশের দেওয়াল গর্তে চলে যাওয়ায় ঝুঁকির মধ্যে পড়ে ছয়তলা সুন্দরবন হোটেল। ওই গলির সামনের অংশে বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়কেও ফাটল তৈরি হয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী গাজী ফিরোজ রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আপাতত বালু দিয়ে ধস ঠেকানোর চেষ্টা করা ছাড়া বিকল্প নেই। তবে বৃষ্টি হলে ধসের ঝুঁকি বাড়বে।”
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেখানে পাইলিং করা হচ্ছে, তার পেছনের অংশে (বসুন্ধরা সিটির উল্টো দিকের অংশ) বালুর ট্রাক যেতে না পারায় সেখানে বালু ফেলা যাচ্ছে না। ওই অংশটি নিয়েই এখন আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।
সকালে ঘটনাস্থলে এসে মেয়র আনিসুল সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ধারণা করেছিলাম ১৫০০ ট্রাক বালু দিয়ে ভরাট করা যাবে, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে দ্বিগুণ লাগবে।”
ন্যাশনাল ব্যাংকের এই ভবনটি নির্মাণ করছে এম এস কনস্ট্রাকশনস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মো. সালাহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “সিটি করপোরেশনের সহায়তায় বেশির ভাগ বালু আমরাই ফেলেছি।”
এ সময় মেয়র আনিসুল তাকে প্রশ্ন করেন, “ন্যাশনাল ব্যাংক নাই কেন?”
বৃহস্পতিবার গৃহায়ণন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘটনার জন্য ভবন মালিক ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হয়।
এ ঘটনায় রাজউক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বললেও দুই দিন পরও কোনো অগ্রগতি জানা যায়নি।
দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ঝুঁকির কারণে বন্ধ রাখা সার্ক ফোয়ারা থেকে পান্থপথ ও হাতিরপুলের দিকের রাস্তা আগামী রোববারের মধ্যে খুলে দেওয়া হবে।
“রোববারের মধ্যে এ রাস্তা খুলে দেওয়া হবে বলে আশা করছি। এ ঘটনার দায়ভার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ও রাজউকের।”
রোববারের মধ্যে ‘সব ঠিকঠাক না হলে’ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান খোকন।