অবরোধ-হরতালে চাঁদপুরে পেট্রোল বোমায় নিহত ট্রাক চালক জাহাঙ্গীরের বাড়িতে চলছে স্বজন-প্রতিবেশীদের শোকের মাতম।
Published : 19 Mar 2015, 03:28 PM
বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী, সন্তানদের সান্ত্বনা দিতে যারা চেষ্টা করছেন তারাই আবেগপ্রবণ হয়ে যাচ্ছেন।
বুধবার গভীর রাতে চাঁদপুর সদরের চান্দ্রা চৌরাস্তায় ট্রাকে পেট্রোল বোমা হামলায় ঘটনাস্থলে নিহত হন চালক মো. জাহাঙ্গীর (৪০)।
এ হামলায় দগ্ধ হন আরও তিনজন। তাদের বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বারাকপুর শেখ পাড়ায়।
যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে বাগআচড়া বেলতলা এলাকায় জাহাঙ্গীরের বাড়ি। পাকা রাস্তার ধারে ইট ও বেড়া দিয়ে তৈরি টালির ছাউনির একটি ঘর।
রাতেই বাড়িতে জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর খবর পৌঁছে। তখন থেকে চলছে শোকের মাতম। স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীরা আসছেন সান্ত্বনা দিতে।
আট জনের সংসারে একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন জাহাঙ্গীর।
বৃহস্পতিবার সকালে তাদের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, দুই সন্তান জাহিদ (৫) ও সাইদকে (২) জড়িয়ে ধরে স্ত্রী খাদিজা বেগম বিলাপ করছেন আর বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।
ছেলের মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে গেছেন জাহাঙ্গীরের বৃদ্ধা মা সাজেদা বেগম ও বাবা ভ্যান চালক সুরত আলি।
জাহাঙ্গীরের বড় বোনের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা ছোটবেলা থেকেই মামার বাড়িতে থাকে। সেখানে থেকেই বাগআচড়া বালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। তার সব খরচ বহন করতেন মামা জাহাঙ্গীর। পালন করতেন বাবার আদর-স্নেহে।
জাহাঙ্গীরের বাবা সুরত আলিকে সঙ্গে নিয়ে বাগআচড়া, নাভারন, বেনাপোল সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন জাহাঙ্গীরের লাশ গ্রহণ করতে বৃহস্পতিবার সকালে বাগআচড়া থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান কিনা এই ঘটনায় যুক্ত ব্যক্তিদের আটক করে উপযুক্ত সাজা দেওয়ার দাবি জানান।
সোমবার বাগআচড়া থেকে গরু নিয়ে জাহাঙ্গীর চট্টগ্রাম যান। সেখানে গরু পৌঁছে দিয়ে ট্রাকে কাগজ তুলে আবার যশোরের উদ্দেশে রওয়ানা হন। জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ছিলেন তার সহকারী রুবেল, একজন গরু ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম এবং ট্রাকের মালিক শরিফুল ইসলাম।