অভিজিৎ রায়ের মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে মিলন চত্বরের উল্টো দিকের ফুটপাতে রাখা হয়, যেখানে বর্বর ও নৃশংস হামলায় অকাল মৃত্যু হয় সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী এই লেখকের।
Published : 01 Mar 2015, 12:15 PM
সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা জানানো শেষে রোববার বেলা ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তার আনা হয় ওই হামলাস্থলে, যেখানে দুদিন আগে বইমেলা থেকে ফেরার পথে তাকে হত্যা করা হয়।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসংলগ্ন ওই রাস্তায় মরদেহ রাখার সময় অভিজিতের হামলাকারীদে শিগগির গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন উপস্থিত বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
সেখানে প্রায় ৩০ মিনিট রাখার পর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাবা অধ্যাপক অজয় রায়ের সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে।
অভিজিৎ রায়ের ইচ্ছা অনুযায়ী, তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য দান করা হবে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে রোববার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে অভিজিতের কফিন আনার পর রাখা হয় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বানানো বেদীতে।
সম্মিলিত সংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান শুরুর আগেই ফুল হাতে সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন বন্ধু, স্বজন, শুভানুধ্যায়ী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষারী ও বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা।
মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিত যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করছিলেন প্রকৌশলী হিসাবে। সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে তিনি যুক্তিনির্ভর লেখালেখি করে আসছিলেন নিয়মিত। তিনি ছিলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের একজন নিয়মিত কলামনিস্ট।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে সঙ্গে নিয়ে বইমেলা থেকে ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলন চত্বরের উল্টো পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ফুটপাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিতকে। হামলায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বন্যার একটি আঙুল।
বাবা অজয় রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হওয়ায় অভিজিতের শৈশব-কৈশর কেটেছে এই বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতেই। অথচ সেই ক্যাম্পাসেই বইমেলা ঘিরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শাহবাগ থানা থেকে দুইশ গজ দূরে ঘাতকের চাপাতির আঘাতে খুন হতে হয়েছে তাকে।