মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের সঙ্গে শনিবার তার পরিবারের সদস্যরা দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে।
Published : 20 Feb 2015, 12:42 PM
জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের ছেলে হাসান ইকবাল শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা আজ দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আইনজীবীরা আমাদের বলেছেন, শনিবার তারা সাক্ষাত করার পর আমাদের দেখা করতে।”
বৃহস্পতিবার কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা জারির পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে তা পড়ে শোনানো হলেও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কারা কর্তৃপক্ষ তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে হাসান ইকবাল জানান।
তিনি বলেন, “প্রতিমাসে একবার আমরা বাবার সাথে দেখা করি। গত ৩১ জানুয়ারি দেখা করেছিলাম। সে অনুযায়ী ২৮ ফেরুয়ারি সাক্ষাতের কথা ছিল।”
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সাক্ষাতের জন্য মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। তবে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তারা কোনো লিখিত আবেদন করেননি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর তিন বিচারক বৃহস্পতিবার কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানায় সই করলে নিয়ম অনুযায়ী তা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া।
কারাগারে পৌঁছানোর পর তা ফাঁসির আসামি কামারুজ্জামানকে সেই পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয় বলে ফরমান আলী জানান।
তিনি বলেন, “পরোয়ানা আসার পর কামারুজ্জামান আইনজীবীদের সাথেই প্রথমে দেখা করতে চেয়েছেন।”
পরোয়ানা জারি হওয়ার পর ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “এখন কামারুজ্জামানকে ফাঁসিতে ঝোলানোর সব প্রক্রিয়া সরকারকে এগিয়ে নিতে হবে। তবে উচ্চ আদালত যদি এই প্রক্রিয়া স্থগিত করতে বলে সেক্ষেত্রে তা স্থগিত থাকবে।”
কামারুজ্জামান সর্বোচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবেন ১৫ দিনের মধ্যে, যে দিন গণনা বুধবার রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের সময় থেকেই শুরু হয়ে গেছে।
তার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের সত্যায়িত কপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তারা রিভিউ আবেদন করবেন।
একাত্তরে আল বদর বাহিনীর ময়মনসিংহ জেলা শাখার প্রধান কামারুজ্জামানকে ২০১৩ সালের ৯ মে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ চূড়ান্ত রায়েও একই সাজা বহাল রাখে।
এর আগে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে যুদ্ধাপরাধে দোষী সাব্যস্ত প্রথম ব্যক্তি হিসাবে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।