নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের মামলার অভিযোগপত্র আগামী বছরের ২২ জানুয়ারির মধ্যে দিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
Published : 01 Dec 2014, 04:07 PM
র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ এই মামলায় গ্রেপ্তার ২৪ জনের উপস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম এইচ এম শফিকুল ইসলাম সোমবার এ নির্দেশ দেন।
সাত মাস পেরিয়ে গেলেও অভিযোগপত্র না দেওয়ার কথাটি শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ তোলার পরই আদালতের এই আদেশ হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাত মাস পার হলেও আদালতে এখনও অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি। শুনানিতে আমরা এ বিষয়ে আবেদন জানালে আদালত অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য সময় নির্ধারণ করে দেন।”
নিয়মিত হাজিরার র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন ও এম এম রানাসহ ২৪ জনকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
আসামিদের মধ্যে র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ কয়েকজনকে হাতকড়া পরানো ছাড়াই এজলাসে হাজির করার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত।
“হাতকড়া পরানোর ক্ষেত্রে পুলিশ বৈষম্য করেছে,” অভিযোগ করে আদালতের নির্দেশনা চান তিনি। বিচারক আগামী ২২ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন এ বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর নিয়মিত হাজিরার দিনে মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা তারেক সাঈদকে হাজির না করায় কারা কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠিয়েছিল আদালত।
ওই নোটিসের জবাবে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অসুস্থতার কারণে তারেক সাঈদকে হাজির করা সম্ভব হয়নি।
“তবে আমরা এই বিষয়ে বলেছি, এটা গ্রহণযোগ্য কোনো কারণ হতে পারে না,” বলেন আইনজীবী সাখাওয়াত।
মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি নুর হোসেনকে ভারত থেকে এখনও দেশে ফিরিয়ে না আনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
সাখাওয়াত বলেন, “নুর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হলে অনেক রাঘব বোয়ালদের নাম বেরিয়ে আসবে। তাই তাকে দেশে ফেরত আনছে না সরকার।”
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়, তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে।
ওই ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় নজরুলের স্ত্রী এবং চন্দন সরকারের জামাতা বাদী হয়ে দুটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় র্যাবের কর্মকর্তাসহ মোট ২৪ জনকে।
অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ১২ জন ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া ঘটনার সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ১৪ জন।
কাউন্সিলর নুর হোসেন র্যাবকে অর্থ দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে নজরুলের পরিবারের অভিযোগ।
বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে র্যাব তাদের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার জন্য গত ২৩ নভেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে হত্যাকাণ্ডে তারেক সাঈদ, রানা ও আরিফের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে বলে বিভিন্ন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে কয়েকটি সংবাদপত্রে খবর ছাপা হয়েছে।