যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করে তার পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, তাকে ঢাকা কারাগারে স্থানান্তর নিয়ে তাদের উদ্বেগ থাকলেও এই দেখাকে ‘শেষ’ ভাবছেন না।
Published : 05 Nov 2014, 04:03 PM
বুধবার ১০টা ৩৮ মিনিট থেকে ১১টা ৮ মিনিট পর্যন্ত আধা ঘণ্টার জন্য দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয় তাদের।
এ সময় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন স্ত্রী নুরুন্নাহার, চার ছেলে হাসান ইকবাল, হাসান আহমেদ, হাসান ইকরাম, হাসান ঈমাম, মেয়ে আতিয়া নূর, ভাই নাজিরুজ্জামান ও আবদুল্লাহ আল মাহাদী, বোন মোহসীনা বেগম ও ভাগ্নে আবদুল আলিম।
দেখা করে বেরিয়ে এলে কামারুজ্জামানের চতুর্থ ছেলে হাসান ইমামের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল তারা এই দেখাকে ‘শেষ দেখা’ মনে করছেন কিনা?
জবাবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “না শেষ সাক্ষাৎ হবে কেন? এটা নিয়মিত দেখা। কাশিমপুর কারাগারে থাকতে আমরা নিয়মিত দেখা করতাম। গত ঈদেও দেখা করেছি। তাই আজ দেখা করলাম।”
হাসান ইমাম বলেন, “বাবাকে কাশিমপুর থেকে ঢাকায় আনায় আমরা চিন্তিত। আজকের দেখা শেষ দেখা তা ভাবছি না। আমরা এখনও রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পাইনি।”
কামারুজ্জামানের পরিবার ‘শেষ দেখা’ না ভাবলেও দু’ একদিনের মধ্যে ফাঁসি হবে এমন খবরে চাউর গোটা কারাগার এলাকা। অন্য আসামিদের সঙ্গে দেখা করতে আসা স্বজনদের মনেও তাই প্রশ্ন: ‘ফাঁসি কি আজই হবে?’
কামারুজ্জামানের পাঁচ ছেলে এক মেয়ের মধ্যে চার ছেলে ও মেয়ে বুধবার তার সঙ্গে কারাগারে দেখা করেছেন। তৃতীয় ছেলে হাসান জামান মালয়েশিয়া রয়েছেন।
হাসান ইমান জানান, সেখানে তার ভাই চাকরি করেন তাই আসতে পারেননি। তবে শিগগির এসে দেখা করবেন।
বড় ছেলে হাসান ইকবাল জানান, তার বাবা সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন।
পরে জ্যেষ্ঠ কারাধ্যক্ষ ফরমান আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিয়মিত সাক্ষাতের অংশ হিসাবে পরিবারের সদস্যদের দেখা করতে দেওয়া হয়েছে।”
নিয়ম অনুযায়ী, আপিলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হলে তা ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। তারপর নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে ট্রাইব্যুনাল।
কারাবিধি অনুযায়ী প্রত্যেক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ পাবেন। মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পর জেল সুপার তা বন্দিকে জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার বিষয়ে তার মত চাইবেন। সাত দিনের মধ্যে তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
আপিলের রায় হওয়ার দিনই ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেছিলেন, “পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পাওয়ার পর তা জেলা প্রশাসকের কাছে যাবে। কারা কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে রায় কার্যকর করবে।”