মাওয়ায় লঞ্চডুবির ঘটনায় তল্লাশি অভিযান সীমিত করে আনার পরদিন ‘সরকারি সিদ্ধান্ত’ জানাতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক।
Published : 11 Aug 2014, 09:52 AM
সোমবার বেলা ১১টায় মাওয়ায় ‘পদ্মা’রেস্ট হাউজের এই সংবাদ সম্মেলনে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানও উপস্থিত থাকতে পারেন বলে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উদ্ধার অভিযান সম্পর্কে সরকারের সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে।”
এদিকে পিনাক-৬ লঞ্চের বেঁচে যাওয়া যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য নেবে এই নৌদুর্ঘটনা তদন্তে গঠিত নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি।
ওই লঞ্চের বেঁচে যাওয়া যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত পদ্মা রেস্ট হাউসে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দিতে অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
গত ৪ অগাস্ট কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়া আসার পথে ডুবে যায় লঞ্চ পিনাক-৬। এ পর্যন্ত মোট ৪৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হলেও মাওয়ার কাছে পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়া লঞ্চটির অবস্থান সনাক্ত করা যায়নি আট দিনেও।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের বর্ণনা অনুযায়ী, ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ যাত্রী নিয়ে আসার পথে ঢেউয়ের তোড়ে মাঝনদীতে ডুবে যায় পিনাক-৬।
সরকারি হিসাবে শনিবার পর্যন্ত নিখোঁজের সংখ্যা ১২২ জন বলা হলেও রোববার তা হঠাৎ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়। রোববার বিকালে মাওয়ায় পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে বলা হয়, নিখোঁজ রয়েছেন ৬১ জন।
এদিকে শনিবার তল্লাশি যান কাণ্ডারি-২ এর সাইড স্ক্যান সোনারে নদীর ১৯ মিটার গভীরে একটি ধাতব বস্তুর অস্তিত্ব ধরা পড়ার পর রোববার তাকে ঘিরে উদ্ধার অভিযান সঙ্কুচিত করে আনা হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সার্ভে ভেসেল জরিপ-১০ ও টাগ বোট কাণ্ডারি-২ কে ‘ধাতব বস্তুটির’ অবস্থানে রেখে প্রত্যাহার করা হয় নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ ও ফায়ার সার্ভিসের সব নৌযান।
রোববার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল বলেন, পদ্মার তলদেশে খুঁজে পাওয়া ‘ধাতব বস্তু’ পিনাক-৬ কিনা তা নিশ্চিত করার কাজে তল্লাশি অভিযানের সবটুকু মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতেই এ সিদ্ধান্ত।
তিনি জানান, উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ও নির্ভীক ঘটনাস্থলে থাকবে। ধাতব বস্তুটিতে নোঙর আটকাতে পারলে জাহাজ দুটি সেটি টেনে তোলার চেষ্টা করবে।
ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অন্যান্য সংস্থার নৌযান প্রত্যাহার করা হলেও তাদের ডুবুরিরা রোববারও তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যান।
কাণ্ডারি-২ এর কমান্ডার মঞ্জুরুল করিম চৌধুরী জানান, শনিবারের মতো রোববারও তারা ওপর থেকে নোঙর ফেলে নদীর তলদেশের সেই ধাতব বস্তুতে আটকানোর চেষ্টা করে তীব্র স্রোতের কারণে ব্যর্থ হন। নোঙর আটকানো সম্ভব হলে সেই দড়ি বেয়েই ডুবুরিদের নিচে নামার কথা, যাতে সেটি লঞ্চ পিনাক-৬ কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়।
উদ্ধার অভিযানে থাকা নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, পিনাক-৬ এর দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৬ মিটার। আর সাইড স্ক্যান সোনার স্ক্রিনে যে ছবি পাওয়া গেছে তাতে পদ্মার তলদেশে পাওয়া নৌযানটির দৈর্ঘ্য ১৬ মিটার।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মঞ্জুরুল করিম রোববার বলেন, “যেখানে বস্তুটি পাওয়া গেছে, সেখানে পানির গভীরতা প্রায় ১৯ মিটার। স্ক্রিন রিডিংয়ে দৈর্ঘ্যে আধা থেকে এক মিটার হেরফের হতে পারে। আমরা আশা করছি, আজকের মধ্যেই নিশ্চিত হওয়া যাবে।”