বাংলাদেশে পাঁচ জানুয়ারি নির্বাচন না হলে ভারতের কাছ থেকে সমুদ্রসীমার ন্যায্য হিস্যা আদায় করা সম্ভব হতো না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 10 Jul 2014, 04:14 PM
তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ছাড়া অতীতে অন্য কোনো সরকার বাংলাদেশের অধিকার আদায়ের উদ্যোগ নেয়নি।
বৃহস্পতিবার মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
“এই যে সমুদ্রে আমাদের যে অধিকারটা সুরক্ষিত হলো, এটা আমাদের একটা বিরাট অর্জন, আমাদের দেশের জন্য। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে যদি জয়ী হতে না পারতাম, তাহলে হয়তো এই সমুদ্রসীমাটা ভারতের কাছ থেকে আমরা আনতে পারতাম কিনা সন্দেহ ছিল।”
“কারণ অতীতে অনেক সরকারই ছিল, কেউই এটার কোনো উদ্যোগই নেয়নি,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এক রায়ে বঙ্গোপসাগরের বিরোধপূর্ণ সাড়ে ২৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশকে দিয়ে ভারতের সঙ্গে নতুন সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করে দেয় হেগের আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত।
দুই বছর আগে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা মামলার মীমাংসার পর ভারতের সঙ্গেও বিরোধ নিষ্পত্তিকে সফলতা হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ সরকার।
অন্যদিকে এই রায়ে তালপট্টি দ্বীপের এলাকার নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশ না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলটির নেতা হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এই রায়ে বঙ্গোপসাগরে অর্থনৈতিক সমুদ্রসীমায় ভারতের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গ টেনে কারো নাম উল্লেখ না করেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তারা কিছুই করেনি, কিন্তু খুঁত ধরার একটা চেষ্টা। ওই ভদ্রলোককে বলতে হবে যে… তাকে একটু সাগরে পাঠায়ে দাও, ওই দ্বীপটা কোথায়? ওই দ্বীপে একটা বাড়ি করে থাকেন। তাকে পাঠানো উচিৎ, সে তো ভোলার মানুষ।”
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
“আমাদের সংসদের একটা ইউনিক সিচুয়েশন, সেটা হচ্ছে স্পিকার, লিডার অব দ্যা হাউজ, লিডার অব দ্যা অপজিশন এবং ডেপুটি লিডার চারজনই নারী। বিশ্বে আর কোথাও এরকম নজির নেই।”
২০১৩ সালে প্রকাশিত গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট অনুযায়ী নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে সপ্তম বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, তার সরকার নারী উন্নয়ন নীতি, পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন, মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনসহ নারী উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে প্রশাসন, সামরিক বাহিনী, বিচার বিভাগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য অর্থ ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর উপস্থিতি বাড়ছে।
চাকরিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে কোটা চালু রাখা এবং উদোক্তা তৈরিতে সরকারের বিভিন্ন ধরনের সহায়তার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শিশুদের বিকাশের জন্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও এ সময় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “যাদের মা নেই, বাবা নেই, বা হারিয়ে যাওয়া শিশু, যারা রাস্তায় ঘোরে, মানবেতর জীবন-যাপন করে… মানব সন্তান এভাবে ঘুরে বেড়াবে- এটা হতে পারে না, এটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কাজেই নারী ও শিশু মন্ত্রণালয় সঠিকভাবে উদ্যোগ নেবেন।”