বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কে এম মহিউদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় তিনি জবানবন্দি দেন বলে পুলিশ ও আইনজীবীরা জানিয়েছেন।
নারায়গঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়া বলেন, নজরুল হত্যামামলা এবং চন্দন সরকার হত্যামামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন র্যাবের সাবেক এই কর্মকর্তা।
সকাল ১০টায় আনার পর বিকাল ৩টার দিকে জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হলে তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিউকিউটর ফজলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এম এম রানাকে আদালতে আনার পর তিন ঘণ্টা চিন্তা করার সুযোগ দেয়া হয়। এরপর তিনি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেছেন, সাতজনকে কিভাবে, কোথায় হত্যা করা হয়েছে, কে কে ছিল এই হত্যাকাণ্ডে, কার নির্দেশে ঘটানো হয়েছে, তার বর্ণনা রানা দিয়েছেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।
“আমরা জেনেছি, এম এম রানা দাবি করেছেন, র্যাবের ৩২ জন সদস্য অংশ নিয়েছে এই ঘটনায়। কোন স্তরে কার কী অংশগ্রহণ, সেটাও বলেছেন তিনি।”
আগের দিন একই আদালতে স্বীকারোক্তি দেন রানার আরেক সহকর্মী মেজর আরিফ হোসেন। তার বর্ণনার সঙ্গে রানার বর্ণনায় মিল রয়েছে বলে অতিরিক্ত পিপি ফজলুর জানান।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তার মধ্যে ‘দোষ স্বীকারে’ বাকি রইলেন শুধু ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ।
তৃতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
গত ২৭ এপ্রিল কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের সময় সামরিক বাহিনীর এই তিন কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জে র্যাব-১১ এ ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পর তাদের ফিরিয়ে এনে সামরিক বাহিনী থেকে অবসরে পাঠানো হয়। এরপর তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
আগের দিন রানার সহকর্মী আরিফ ওই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছিলেন বলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ফজলুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
“আমরা জানতে পেরেছি, আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে মেজর আরিফ হোসেন রোমহর্ষক সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। অপহরণের পর ৭ জনকে কোথায়, কিভাবে, হত্যা করা হয়েছে, তা স্বীকার করেছেন তিনি।”
নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলামের অভিযোগ, নূর হোসেন র্যাবকে ৬ কোটি টাকা দিয়ে এই খুন করিয়েছে। আর নূর হোসেনকে পালাতে সহায়তা করেছে র্যাব।
সাত খুনের তদন্তে আদালতের নির্দেশে যে প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি হয়েছে, তাদের কাছে দেয়া সাক্ষ্যে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সাতজনকে তুলে নেয়ার সময় র্যাবের পোশাক পরিহিতদের দেখার কথা জানিয়েছেন।