ময়মনসিংহের ত্রিশালে পুলিশ হত্যা করে জেএমবির দণ্ডিত তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়ার পর রাজশাহীর পাশাপাশি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে।
Published : 23 Feb 2014, 05:37 PM
চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ কারাধ্যক্ষ ছগির মিয়া রোববার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, “ময়মনসিংহের ঘটনার পর থেকে কারাগারে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
“ডেপুটি জেলার জাহেদুল আলমের নেতৃত্বে নিরাপত্তা রক্ষীদের পর্যবেক্ষণের জন্য সাত সদস্যদের একটি পর্যবেক্ষণ দল করা হয়েছে।”
ছগির মিয়া জানান, চট্টগ্রাম কারাগারে জেএমবির ১৫ এবং হিযবুত তাহরীরের ছয় সদস্য বন্দি রয়েছে।
“তাদের মধ্যে জেএমবি সদস্যদের রাখা সেলে বিশেষ নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। জঙ্গিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাতের ক্ষেত্রে এমনিতেই কড়াকড়ি থাকে। ময়মনসিংহের ঘটনার পর তা আরো বাড়ানো হয়েছে।”
চট্টগ্রাম কারাগার সূত্র জানায়, এই কারাগারে বন্দি জেএমবি সদস্য জাবেদ ইকবাল ওরফে আবু ইয়াইয়ার বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ১৫টির বিচার কাজ শেষ হয়েছে। এসব মামলায় তার শতাধিক বছর জেল হয়েছে।
এছাড়া শাহাদাত আলী ওরফে মাসুম বিল্লাহ, আইয়ূব আলী ওরফে আবু জর ও মো. আরসাদুল আলমও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি।
জেএমবির অন্য ১১ জন এবং হিযবুত তাহরীরে ছয় সদস্যের মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
রোববার সকাল ১০টার দিকে ত্রিশালে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে বোমা মেরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবি নেতা সালাউদ্দিন সালেহীনসহ তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়া হয়। এসময় বোমা হামলায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হন।
একটি মামলায় হাজিরার জন্য জেএমবি সদস্যদের গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ময়মনসিংহে নেয়া হচ্ছিল।
ওই ঘটনার পর রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রেড এলার্ট জারি করা হয় বলে জানান রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেন।
তিনি বলেন, “রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সাজাপ্রাপ্ত শতাধিক নেতাকর্মী রয়েছেন। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারাগারের অভ্যন্তর ও আশপাশের এলাকায় রেড এলার্ট জারি করে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।”
চট্টগ্রাম কারাগারেও ছিলেন বোমা মিজান
ত্রিশালে রোববার পুলিশের ভ্যান থেকে ছিনিয়ে নেয়া জেএমবি সদস্য বোমা মিজানের আসল নাম জাহিদুল ইসলাম।
তবে জামালপুর জেলার শেখেরভিটা গ্রামের সুজা মিয়ার এই ছেলে ‘বোমা মিজান’ নামেই বেশি পরিচিতি।
কারা কর্মকর্তা ছগির মিয়া জানান, সর্বশেষ গত বছরের ৩১ অগাস্ট কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে তাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়েছিল।
১৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে হাজিরা শেষে ওইদিনই তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
চট্টগ্রাম কারাগারে নথি অনুসারে, মিজানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় সাতটি, ঢাকার মিরপুর থানায় তিনটি, কক্সবাজার সদর থানায় তিনটি, সাতক্ষীরা ও জামালপুর সদর থানায় একটি করে মোট ১৫টি মামলা রয়েছে।
এর মধ্যে কক্সবাজার থানার তিনটি এবং কোতোয়ালি থানার একটি মামলাসহ চারটি মামলায় তার যাবজ্জীবনসহ ৩৩ বছরের জেল হয়েছে।