সাভারের আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশনসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ১৩ মাস পর ওই কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন ও চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
Published : 22 Dec 2013, 09:54 AM
সিআইডির ইনস্পেক্টর এ কে এম মহসীন উজ জামান খান রোববার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ওয়াসিম শেখের আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ ও ৩০৪ (ক) ধারা অনুযায়ী ‘অপরাধজনক নরহত্যা’ ও ‘অবহেলার কারণে মৃত্যুর’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বছর ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশনসে ওই অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১১২ জন নিহত এবং দুই শতাধিক শ্রমিক আহত ও দগ্ধ হন।
পরদিন আশুলিয়া থানার উপ পরিদর্শক খায়রুল ইসলাম অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। ওই মামলায় নাশকতার পাশাপাশি অবহেলাজনিত মৃত্যুর ( দণ্ডবিধির ৩০৪ ক) ধারা যুক্ত করা হয়। চলতি বছরের ২ জানুয়ারি সিআইডি এ মামলার তদন্ত শুরু করে।
ঘটনার পর শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, আগুন লাগার পরও কারখানার ছয়টি ফ্লোরের কয়েকটিতে দরজা আটকে রাখা হয়েছিল, শ্রমিকদের নিচে নামতে দেয়া হয়নি। এছাড়া ওই কারখানা নির্মাণের ক্ষেত্রে ইমারাত বিধি অনুসরণ না করা এবং অবহেলারও প্রমাণ পাওয়া যায়।
তবে মামলার মূল আসামি দেলোয়ার এক বছরেও গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক পরিবারসহ বিভিন্ন মহলের ক্ষোভ রয়েছে। কৌশলে তাকে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগপত্রের ১৩ আসামির মধ্যে তাজরীনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন, তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার, প্রকৌশলী এম মাহাবুবু মোর্শেদ, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক, কোয়ালিটি ম্যানেজার শহীদুজ্জামান দুলাল ও প্রোডাকশন ম্যানেজার মোবারক হোসেন মঞ্জু পলাতক।
তাজরিনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুলাল, স্টোর ম্যানেজার হামিদুল ইসলাম লাভলু, সিকিউরিটি সুপারভাইজার আল আমীন, নিরাপত্তারক্ষী রানা ওরফে আনারুল, স্টোর ইনচার্জ (সুতা) আল আমীন ও লোডার শামীম মিয়া জামিনে রয়েছেন।
আর কারখানার সিকিউরিটি ইনচার্জ আনিসুর রহমান রয়েছেন কারাগারে।
ফৌজদারী দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩২৫, ৩০৪, ৩০৪ (ক), ৪২৭ ও ৪৩৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।
আর রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১০৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে এ মামলায়।