আইন সংশোধনের ফলে দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা কমেছে বলে মনে করছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান এম বদিউজ্জামান।
Published : 11 Nov 2013, 07:06 PM
সংসদে দুদক আইন সংশোধনের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি হতাশ। দুদক আইনের সংশোধনী সংবিধান ও দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৪ ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”
রোববার সংসদে দুদক আইন সংশোধন বিল পাস হয়েছে। এর ফলে এখন থেকে সরকারি কর্মকর্তা, জজ ও ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে সরকারের অনুমোদন ছাড়া মামলা করা যাবে না।
“এর ফলে কার্যত দুদকের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে,” বলেন বদিউজ্জামান। তার পূর্বসূরি গোলাম রহমানও আইন সংশোধনের এই উদ্যোগে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন।
তবে সংশোধিত আইনের অনুলিপি এখনো হাতে পাননি জানিয়ে বদিউজ্জামান বলেন, “কপি পাওয়ার পর কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ পাঠানো হবে কি না, তা যথাসময়ে সাংবাদিকদের জানানো হবে।”
কর্মকর্তা ও বিচারকদের বিষয়ে মামলার ক্ষেত্রে পূর্ব অনুমোদনের আবশ্যিকতা দুদকের ক্ষর্মক্ষমতা অনেকটাই কমিয়ে দেবে বলে মনে করেন তিনি।
“তদন্ত কর্মকর্তারা এখন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করবেন।”
এই ধরনের সংশোধনী সরকারি কার্যালয়ে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে বলেও বদিউজ্জামান মনে করেন।
“দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সরকারের অনুমোদন ছাড়া দুদক মামলা করতে পারবে না বলে তারা জানবে। ফলে তারা ইজিলি দুর্নীতির সুযোগ পাবেন।”
পুনর্বিবেচনার দাবি টিআইবির
প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত ও মামলা দায়েরে সরকারের পূর্বানুমতির বিধান সম্বলিত আইন সংশোধনেকে সংবিধান ‘পরিপন্থী’ আখ্যায়িত করে তা পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদের প্রতি দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, “মেয়াদের শেষ পর্যায়ে সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক এই সংশোধনী পাস করা শুধু হতাশাজনকই নয়, সরকারের জন্য আত্মঘাতীমূলক।
সংশোধিত দুদক আইনটি এক শ্রেণির রাজনীতিক ও কর্মকর্তাদের গোপন আঁতাতের সুযোগ সৃষ্টি করে বাংলাদেশে দুর্নীতির গতি বাড়িয়ে দেবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন ইফতেখারুজ্জামান।
টিআইবি জানায়, ২০১০ সালের ২৬ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ আইন সংশোধনের প্রস্তাব চূড়ান্ত করার পর তারা উদ্বেগ জানিয়েছিল।
এ বিষয়ে ওই বছরের ১-৫ জুলাই দেশব্যাপী একটি জরিপ চালানো হয় জানিয়ে টিআইবি বলেছেন, ওই জনমত জরিপে প্রায় ৯৭ ভাগ উত্তরদাতা দুর্নীতি প্রতিরোধে একটি স্বাধীন ও কার্যকর দুর্নীতি দমন কমিশন প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।