জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত জানালেও হরতাল প্রত্যাহার না হওয়ায় হতাশার সঙ্গে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
Published : 03 Nov 2013, 11:33 PM
বিরোধী দলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, “তারা যদি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথাই বিবেচনা না করেন, তাহলে কিসের জন্য রাজনীতি? ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যই তারা এগুলো করছেন। তাদের এই কর্মকাণ্ডে আমি খুবই দুঃখিত, উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ।”
আগামী ৪ নভেম্বর থেকে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের তিন দিনের টানা হরতালের কারণে তা পেছাতে হয়েছে।
শনিবার হরতালের ঘোষণা আসার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হরতাল তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন নাহিদ। সেই সঙ্গে বলেছিলেন,পরীক্ষা পেছানো হবে কি না, তা রোববার সংবাদ সম্মেলনে জানানো হবে।
সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পরীক্ষা পেছানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে নাহিদ বলেন, “তারা হিংস্রতা ও অন্যায় আচরণ করছেন, কিন্তু আমরা তো তাদের বিরুদ্ধে ঝগড়া কিংবা যুদ্ধে লিপ্ত হতে পারি না।
“আমাদের কাছে শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তাই বিবেচ্য। হিংস্রতা করে তাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেবেন না। বিবেক জাগ্রত করেন।”
বিরোধী দলের গত সপ্তাহের ৬০ ঘণ্টা হরতালে সংঘাতে অন্তত ১৪ জন নিহত হন। এছাড়া ব্যাপক বোমাবাজিও হয়। পরবর্তী হরতালের আগের দিন রোববারও ঢাকায় প্রায় ২০টি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে।
এর আগেও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মধ্যে হরতাল ডাকার বিষয়টি তুলে ধরে ‘দেশবিরোধী’ কর্মসূচি প্রতিহত করতে জনগণের প্রতি আহ্বানও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
ছাত্রনেতা থেকে বাম আন্দোলনের নেতা হয়ে বর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতা নাহিদ বলেন, “আমিও ১৯৬২ সাল থেকে রাজপথে আন্দোলন করছি। ৫০ বছরে কখনো দেখিনি কোনো রাজনৈতিক দল বলছে ,পরীক্ষা নিয়ে কী হবে।
পরীক্ষার্থী কমেছে
এবারের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষায় ১৯ লাখ দুই হাজার ৭৪৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে জেএসসিতে ১৫ লাখ ৮৭ হাজার ৩১৩ জন এবং জেডিসিতে তিন লাখ ১৫ হাজার ৪৩৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
গত বছর এই পরীক্ষায় ১৯ লাখ আট হাজার ৩৬৫ জন অংশ নিয়েছিল। সেই হিসাবে জেএসসি-জেডিসিতে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে পাঁচ হাজার ৬১৯ জন।
এবছর ২ হাজার ৪২০টি কেন্দ্রে ২৭ হাজার ৭৪৮টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসছে। এর মধ্যে আট লাখ ৯৫ হাজার ৯১ জন ছাত্র এবং ১০ লাখ সাত হাজার ৬৫৫ জন ছাত্রী।
বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র এবং গণিত ছাড়া এবার অন্য বিষয়গুলোর পরীক্ষা সৃজনশীল প্রশ্নে হবে।
শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই তারাও শ্রুতি লেখক পাবেন।
জেএসসিতে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকেই বৃত্তি দেয়া হবে, আগে বৃত্তির জন্য আলাদা পরীক্ষা নেয়া হত। ২০১০ সাল থেকে জেএসসি ও ২০১১ সাল থেকে জেডিসি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।